ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিতে পদ পেল ‘সন্ত্রাসী’
প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সোমবার
ঢাকা-মহানগর-উত্তর-বিএনপিতে-পদ-পেল-সন্ত্রাসী
গত শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৭১টি ওয়ার্ড (সাংগঠনিক ওয়ার্ডসহ) কমিটি ঘোষণা করে। মামুনকে পল্লবী থানার ৯১নং ওয়ার্ড (সাংগঠনিক ওয়ার্ড) কমিটির ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।
শনিবার রাতে সংগঠনটির দফতরের দায়িত্বে থাকা মো. জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মফিজুর রহমান মামুন পল্লবীর ‘ধ’ ব্লকের মামুন হিসেবেই পরিচিত। বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুর হাত ধরেই এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন মফিজুর রহমান মামুন।
ওই সময় ছুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও খুন-খারাবিতে হাত পাকান মামুন। এক সময় ছাত্রদলের রাজনীতিতে ‘দাগি অপরাধী’ হিসেবেই মিরপুরজুড়ে মামুনের নাম ছিল।
২০০১ সালে আপন ছোট ভাইকে ছিনিয়ে নিতে পল্লবী থানা ঘেরাও করে আলোচনায় আসেন সন্ত্রাসী মামুন। ঐ বছরই গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন কারাভোগের পর ২০০৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যান তিনি। এরপর শুরু হয় তার ফেরারি জীবন।
পাসপোর্ট জালিয়াতি ও অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিনি ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেফতার হন। ওই সময় ১০ বছর সাজাভোগ করেন। কারাভোগ শেষে ভারতে বসেই মামুন মিরপুরের অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী ইব্রাহিম ও সাহাদাতের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পল্লবী এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ওই সময় তার বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা, ১৫টি গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ২টি মামলায় সাজা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
পল্লবীর মুসলিম বাজারের স্থানীয়রা জানান, মামুন মিরপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নেন। মামুনের কিলার বাহিনীর সদস্যরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এরা পল্লবী এলাকার আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লবী থানা বিএনপির সাবেক এক সিনিয়র নেতা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি বলেন, মামুন কিছুদিন আগেও যুবদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেখানে পদ-পদবী না পাওয়ায় বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিতে ঠাঁই নিয়েছে। এমন একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে দলে রেখে কী লাভ? সে তো ভারতে পালিয়ে থাকে। সে একজন ফেরারি (পলাতক)। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দলের নাম ভাঙিয়ে আবারো সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে। ভবিষ্যতে অপকর্ম করার জন্য এই পদ বাগিয়েছে সে।
পল্লবী থানা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি ও ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ওয়ার্ড কমিটিগুলো মহানগর থেকে দেওয়া হয়েছে। মহানগর নেতারা বলেছেন, এটা তাদের ঈমানি দায়িত্ব। মামুন কে, তার বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। কাদের কমিটিতে আনা হয়েছে- সেটা মহানগরই ভালো জানে। যারা কমিটি দিয়েছে, তারাই বলুক মামুন কে?
মামুন সম্পর্কে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।