শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগের জয় হবে: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

শেখ-হাসিনার-নেতৃত্বে-উন্নত-দেশ-বিনির্মাণে-আওয়ামী-লীগের-জয়-হবে-ওবায়দুল-কাদের

শেখ-হাসিনার-নেতৃত্বে-উন্নত-দেশ-বিনির্মাণে-আওয়ামী-লীগের-জয়-হবে-ওবায়দুল-কাদের

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সংগ্রামে আওয়ামী লীগের জয় হবেই বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিষেদ্গার ও অবান্তর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন। 

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন, আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গঠিত সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য গণতন্ত্রের রীতিনীতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থী। নির্বাচন কমিশন শুধু একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানই নয়, এটি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের রেফারি। খেলায় কোনো দল খারাপ খেললে অনেক ক্ষেত্রেই তারা রেফারিকে দোষারোপ করে। বিএনপির অবস্থাও অনেকটা সেরকম। খেলায় পরাজিত হয়ে অথবা খেলায় অংশগ্রহণ না করে রেফারিকেই দোষারোপ করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনী মাঠে অংশগ্রহণ করে না। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারার চেষ্টা কিংবা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনে যদি কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় তবে তার দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি তোয়াক্কা না করে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে বিষেদগার করায় বিএনপির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে, আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রকেই প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ কমিশনের প্রতিটি সিদ্ধান্তই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। তাই নির্বাচন কমিশনের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ দেশের সংবিধান পরিপন্থী। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেউ না কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারে। কিন্তু সে সংক্ষুব্ধতা প্রকাশের নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে। সে পথে না গিয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিষেদগার রাষ্ট্র, সমাজ ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভিত্তিমূলে আঘাত।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার বিধান সংযোজিত হয়। সে সময় বিশ্বের অনেক দেশেই নির্বাচন পরিচালনার বিষয়টি নির্বাহী বিভাগের হাতে রাখা হতো। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে। স্বৈরশাসক জিয়া অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার অভিপ্রায়ে ১৯৭৭ সালের ৩০ মে হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন করে এবং তার পক্ষে হ্যাঁ ভোট প্রদানের সকল আয়োজন সম্পন্ন করে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে এক নিকৃষ্টতম প্রহসনে রূপ দান করে। জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেন পরবর্তী স্বৈরশাসক এরশাদ ও খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পুনর্প্রবর্তনের পর খালেদা জিয়া একইভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে কলুষিত করেন। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন গঠিত অন্তত দু'টি নির্বাচন কমিশনকে (কে.এম. সাদেক ও এম.এ আজিজ) বিদায় নিতে হয়েছে সম্মিলিত জনরোষের মুখে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টায় ১৯৯৬ সালে ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করে বিএনপি। দলীয় লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে বিচারপতিদের বয়সসীমা বাড়ানো হয়। অন্যদিকে, ২০০১ সাল পরবর্তী সময়ে প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার প্রস্তুত এবং ছাত্রদলের ক্যাডারদের নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে পেরেক ঠুকে ক্ষমতা জবর দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় বিএনপি। কিন্তু এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সৃষ্টি গণআন্দোলন ও দাবির মুখে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত হওয়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় বিএনপির নির্বাচনী রাজনীতি।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও প্রশাসনিক কাঠামো বৃদ্ধির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনসহ যা কিছু উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে।  

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ পরবর্তী সময়ে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোট ব্যাংক বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষমতা দখলের উপায়ন্তর না পেয়ে জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সাহস হারিয়ে ফেলে। ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে আন্দোলনের নামে শতশত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট। যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক বিএনপি ধারাবাহিকভাবেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত; তাই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ভ্রষ্ট নীতি গ্রহণ করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে বিএনপি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং সাংবিধানিক বিধান ও আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপির প্রতি জনগণের কোনো আগ্রহ নেই তাই জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত বিএনপি সার্চ কমিটির প্রতি বিরূপ মন্তব্য ও লাগাতার অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই ক্ষমতায় থাকবে। সংবিধান সম্মতভাবে যথাসময়েই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ আবার রাষ্ট্র পরিচালনায় থেকে উন্নয়ন-অগ্রগতি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সংগ্রামে জয় আমাদের হবেই।