শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খালেদা জিয়ার ‘সম্মাননার খবর’ নিয়ে ক্ষেপেছেন তারেক

প্রকাশিত : ০২:০৫ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার

খালেদা-জিয়ার-সম্মাননার-খবর-নিয়ে-ক্ষেপেছেন-তারেক

খালেদা-জিয়ার-সম্মাননার-খবর-নিয়ে-ক্ষেপেছেন-তারেক

অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে থাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বিকার ছিল না দলের হাইকমান্ড নেতাদের। এ কারণে একদিন দু’দিন নয়, পেরিয়ে গেছে সাড়ে তিন বছর। 

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার হাতে কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও) নামের বেনামি একটি সংগঠনের সম্মাননা তুলে দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যা সম্মাননা পাওয়ার সাড়ে তিন বছর পর হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে বেজায় ক্ষেপেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার পুত্র লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান।

জানা গেছে, এ বিষয়ে তারেক রহমানের কড়া নির্দেশ ছিল, বিষয়টি যেন মিডিয়ার সামনে না আসে। 

কিন্তু কে শোনে কার কথা? এতদিন চুপ থাকলেও অবশেষে গত ৮ ফেব্রুয়ারি দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টি গণমাধ্যমের সামনে আনেন। আর এতে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন তারেক রহমান। 

লন্ডন থেকে ফোনে তারেক রহমান মির্জা ফখরুলকে বলেছেন, ‘কাজটি ভালো করেননি। এর ফল আপনাকে ভোগ করতে হবে।’

বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যমতে, ফেরারি আসামি তারেক রহমান কোনোভাবেই চান না বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাবমূর্তি ভালো হোক। সে কারণে দলের সবাইকে বলে রেখেছেন, তার কাছে না শুনে যেন কোনো সিদ্ধান্তই না নেয়া হয়। 

কিন্তু তা অমান্য করে প্রাণের নেত্রীকে খুশি করতে মির্জা ফখরুল কানাডার মানবাধিকার সংস্থা কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়টি জনসম্মুখে এনেছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি বৃদ্ধির বিপরীতে ক্ষুণ্নই হয়েছে। কারণ এই ঘটনায় উঠে এসেছে তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের পুরোনো সেই কেচ্ছা। 

আরো পড়ুন> পদ রক্ষায় খালেদার হাতে ভুয়া সম্মাননা সনদ তুলে দিলেন ফখরুল

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় খালেদাপন্থী একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে। তারা বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কোনো বিষয়েই তো কথা বলা যায় না। তারেক রহমানের নিষেধ আছে। তারপরও মির্জা ফখরুল সাহস করে তাকে না জানিয়ে পুরস্কারের ঘটনাটি মিডিয়ার সামনে বলেছেন। শুনেছি এ কারণে ফখরুলকে ফোন করে তারেক হুমকি দিয়েছেন। ফখরুলও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। বলেছেন, ‘যা হবার হবে। নেত্রীর জন্য এতটুকু তো করতেই পারি, তাই না!’

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা বলছেন, খালেদা জিয়া ও তারেক মা-ছেলে হলেও তাদের দু’জনার মধ্যকার সম্পর্ক সাপে-নেউলে। তারা কেউ কাউকে সহ্য করতে পারেন না। এ কারণে ২০১৮ সালে পুরস্কার পেলেও বিষয়টি চেপে রাখে তারেক রহমান, যাতে টাকা দিয়ে কেনা হলেও খালেদার এই প্রাপ্তির খবর কেউ না জানে। কিন্তু শেষ অবধি বিষয়টি আর গোপন রইল না। ফখরুলই সাড়ে তিন বছর পর সম্মুখে আনলেন। এ থেকে আবারও প্রমাণিত হলো, নিজেদের সাংগঠনিক তৎপরতা শূন্য বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা এমন সব অকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যা দিয়ে প্রকাশ পায় দলটির নিদারুণ বিশৃঙ্খলতার চিত্র।