জামায়াতের সঙ্গ নিয়ে বিএনপি নেতাদের মতানৈক্য
প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার
জামায়াতের-সঙ্গ-নিয়ে-বিএনপি-নেতাদের-মতানৈক্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধাপরাধ ও ধর্মের আড়ালে সহিংসতা বিস্তারের অভিযোগে জনগণ ও রাজনীতিতে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া জামায়াতকে প্রশ্রয় দেওয়ায় শুরু থেকেই সমালোচিত হতে হচ্ছে বিএনপিকে। তবে জনগণের মতকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ও আর্থিক সহায়তা পেতে জেনেশুনে জামায়াতের পাপের ভাগীদার হয় বিএনপি।
আর এই পাপের ভাগীদার থেকে মুক্ত হতে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতকে ছাড়তে আগ্রহী হয়েছে বিএনপি। গত ২৮ জানুয়ারি ‘বৃহত্তর ঐক্য’ গড়তে বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে দলটি। তবে এতে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে আমন্ত্রণ জানায়নি বিএনপি।
এরপরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে, জামায়াতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি। সর্বশেষ বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এতে নিজ নিজ বাসা থেকে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
আরো পড়ুন>>> বিএনপি এখনো ‘সার্কাস পার্টি’
বৈঠক সূত্র বলছে, ভার্চুয়াল আলোচনায় জামায়াতকে ২০ দলীয় জোট থেকে বের করে দিতে একমত হন বিএনপির বেশ কয়েকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য। বিএনপির সুনাম রক্ষায় ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বের করে দেওয়ার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তারা। তবে বেশ কয়েকজন সদস্য এর বিরোধিতা করেছেন।
প্রায় ৫ ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে জামায়াতের ভাগ্য নির্ধারণ নিয়ে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তবে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের পক্ষে-বিপক্ষে শীর্ষ নেতাদের মতানৈক্যে শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।
আলোচনার এক পর্যায়ে রাজনীতিতে বিএনপিকে চাঙ্গা করতে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গত্যাগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বক্তব্য দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দেশের জনগণ আর অশিক্ষিত ও মূর্খ নয়, তাই জামায়াতের মতো ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী দলকে সঙ্গে নিয়ে চলাকে বোকামি মনে করছেন গয়েশ্বর। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সবার বক্তব্য শোনার পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে জামায়াতের বিষয়ে পরবর্তীতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন তারেক।
আর এর মধ্য দিয়েই জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে তারেক রহমান নানা হিসাব কষেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।