বিএনপি এখনো ‘সার্কাস পার্টি’
প্রকাশিত : ০৩:০৫ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
বিএনপি-এখনো-সার্কাস-পার্টি
জানা গেছে, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে বিএনপি নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, সৎ, যোগ্য, পরীক্ষিত, ঈমানদার, বিশ্বস্ত ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের শূন্যতা আজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সার্কাস পার্টিতে পরিণত করেছে। দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বেসামাল রাজনীতির ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে পাপিয়া কথাগুলো বলেছিলেন। তার কথার প্রমাণ করেছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ধারাবাহিক বেসামাল রাজনীতি।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাজপথ বাদ দিয়ে নয়াপল্টন কেন্দ্রীক ঘরোয়া রাজনীতি, আন্দোলনের নামে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা, মনোনয়ন বাণিজ্য, পদ বাণিজ্য ও ভারসাম্যহীন রাজনীতির জন্য বিএনপির চরম সংকটে পড়েছে। আর এ দলকে সংকটে ফেলার পেছনে স্থায়ী কমিটির প্রত্যেক সদস্যের হাত রয়েছে। এসব কেন্দ্রীয় নেতাদের কারণে বিএনপি দেশবাসীর কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে। বিএনপির নাম শুনলেই মানুষ অবজ্ঞার হাসি হাসে।
সূত্র আরো জানায়, বিএনপির রাজনীতির বড় ভুল ছিল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা। এ হামলায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন তারেক রহমান। বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও। এমন নানা ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের কারণে রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
ঢাকা উত্তর বিএনপির এক নেতা বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে নেতিবাচক কার্যকলাপের কারণে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত ১২ বছরে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপির হাইকমান্ড তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনবরত প্রতারণা করেছে। ঈদের পর আন্দোলনের মতো বারবার হাস্যকর মন্তব্য করে নেতাকর্মী ও দেশবাসীর কাছে হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে বিএনপি।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষিত নেতাদের উপেক্ষা করে হাইব্রিড ও বিত্তশালীদের মনোনয়ন দেওয়া, নির্বাচনকালীন দলীয় সংঘাত, তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতারণা, দল গোছানোর ব্যর্থতার জন্য বিএনপি এখন হাসির খোরাক। অনেকে বিএনপিকে রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে সার্কাস পার্টি বলেও অবজ্ঞা করে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর ভরসা নেই উল্লেখ করে ঢাকা উত্তর বিএনপির এ নেতা বলেন, মির্জা ফখরুলরা এখন নামমাত্র রাজনীতি করেন। তাদের অবস্থান ধরে রাখতে স্বল্প শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিতদের নেতা বানিয়েছেন। এসব হাইব্রিড নেতারা বরাবরই ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছেন। অপকর্ম, দুর্নীতি, অর্থপাচার, জনগণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করতে গিয়ে নিজেদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছেন। এসব কারণে বিএনপি নেতারা বর্তমানে জনগণের কাছে মুখ দেখাতে লজ্জা পান।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিএনপি কয়েকবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আমলা ও প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়া দলটি দেশ পরিচালনায় সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এখনকার বিএনপির নেতাদের নির্বুদ্ধিতা দেখে দলটির প্রথম সারির নেতারা হাসেন। কেউবা দলকে সার্কাস পার্টির তকমাও দেন। নেতাদের নির্বুদ্ধিতা সেই তকমা এখনো বজায় আছে। যারা বিএনপিকে সমর্থন করেন বা ভালোবাসেন বিষয়টি তাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।