এবার করোনার পর বিএনপির আন্দোলন
প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
এবার-করোনার-পর-বিএনপির-আন্দোলন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আপাতত আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। সংক্রমণ একটু হ্রাস পেলে দেখবেন আন্দোলন কাকে বলে? আন্দোলনের তোড়ে এই সরকার ভেসে যাবে। এ রকম কথা শুধু মির্জা আব্বাসই একা বলেননি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিংবা রুহুল কবির রিজভীও একাধিক বার বলেছেন।
কিন্তু আন্দোলন করতে যে ধরনের সাংগঠনিক সক্ষমতা, নেতৃত্ব দরকার হয় তা কি বিএনপির মধ্যে আছে?
২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। গত ১৫ বছরে বিএনপি বড় ধরনের কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় দলটি। সেই আন্দোলনটি সহিংস রূপ নেয়।
ঐ সময়ে বিএনপি-জামায়াতের দুই মাসের টানা অবরোধে নিহত হয়েছিলেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে ৯০ জনই সাধারণ মানুষ। এছাড়া পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬২ জন। ফলে মানুষ এ সহিংস অবরোধকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের এ সহিংস অবরোধ কার্যক্রম থেকে সরে আসতে হয়। সে অবরোধ কবে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেয়া হবে তা দলটির কোনো নেতারই জানা নেই। এরপর থেকে আর মাঠে নামতে পারেনি দলটি।
অন্যদিকে দলটিতে সিনিয়র নেতাদের কোন্দল বাড়ছেই। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়াপন্থী ও তারেক বিরোধীদের কোন্দলের জেরে বিএনপিতে গণপদত্যাগ, বহিষ্কারাদেশ দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া চলছে। বিশেষ করে তারেক বিরোধী গ্রুপের জনপ্রিয়, ত্যাগী নেতাদের একে একে দল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রিয় ঐসব নেতাদের সঙ্গে কাজ করা নেতা কর্মীরাও গণপদত্যাগ করছেন। এর ফলে দলটি রাজধানী ঢাকা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এক ধরনের তাসের ঘরে পরিণত হয়েছে এবং যেকোনো সময় কয়েক টুকরায় খণ্ডিত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এ বাস্তবতায় আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা বাদ দিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন ও দলের সব নেতা-কর্মীদের এক ছাতার নিচে আনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।