ছত্তিশগড়ের মানবসৃষ্ট অরণ্য : পর্যটকদের এক নতুন গন্তব্য
প্রকাশিত : ০৭:৫৫ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার
ছত্তিশগড়ের-মানবসৃষ্ট-অরণ্যপর্যটকদের-এক-নতুন-গন্তব্য
সম্প্রতি বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে গোটা বিশ্বজুড়েই কৃত্রিম অরণ্য তৈরির বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে জাতিসংঘ। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। মূলত দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বনভূমিকে পুনরুজ্জীবিত করতেই এই কর্মসূচি।
অবস্থানের দিক থেকে দেখলে এই খনি মূলত ভিলাই এবং দুর্গ শহরের মধ্যে অবস্থিত। যার একদিকে ইস্পাত এবং অন্যদিকে সিমেন্ট কারখানা। এতে মধ্যবর্তী এই অঞ্চলটিতে ক্রমশ বেড়ে যায় কার্বনের পরিমাণ। পরিবেশের ভারসাম্য পাশাপাশি শুকিয়ে আসে ভূগর্ভস্থ পানিও। কৃত্রিম অরণ্য তৈরি সম্ভব হলে সেই সমস্যার সমাধান মিলবে বলেই অভিমত জানায় পরিবেশকর্মীরা।
তবে আড়াই হাজার একর জমিতে বনসৃজন করা বেশ জটিল কাজ। তাই গোটা প্রকল্পটিকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিয়েছে ছত্তিশগড় বন দপ্তর। প্রথম পাঁচ বছরে বৃক্ষরোপণ করা হবে ৮৮৫ একর জমিতে। এই পর্যায়ে দুর্গ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নন্দিনী খনিকে ঘিরেই রোপণ করা হবে মহুয়া, পিপুল, বট, অশ্বত্থের মতো দীর্ঘায়ু গাছ। পরবর্তী স্তরে বসানো হবে ছোট ও মাঝারি গুল্ম, বনজ এবং ক্যানোপি প্রজাতির গাছ। যে সমস্ত অঞ্চলে সরাসরি বৃক্ষরোপণ সম্ভব নয়। সেখানে জাপানি উদ্ভিদবিদ মিয়াওয়াকির পদ্ধতিতে বীজ ছড়ানো হবে।
নন্দিনী অঞ্চলটি মূলত জলাভূমি অঞ্চল। ফলে, বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলার রসদ এমনিতেই মজুত সেখানে। পাশাপাশি বনভূমি গড়ে তুলতে পারলে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বিল স্টর্ক, হুইসলিং ডাকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের। জীবন ফিরে পাবে হারিয়ে যাওয়া বাস্তুতন্ত্র। সব মিলিয়ে গোটা পরিকল্পনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৩ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ছত্তিশগড় সরকার। এই দশকের শেষেই শেষ হবে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ। পরিকল্পনা সফল হলে আফ্রিকার আদলে মুক্ত সাফারি পার্কও তৈরি করা হবে সেখানে।
ইতোমধ্যেই সেখানের প্রকৃতি ভারতের এক মনোরম সৌন্দর্যের প্রতীকে পরিণত হতে শুরু করেছে। বনায়নকালে বনের জন্মলগ্ন নিজ চোখে দেখতে অনেক পর্যটক যাচ্ছে সেখানে। পর্যটকরা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন, ভবিষ্যতে পরিবেশের একটি বড় সম্পদ হিসেবে পরিনত হবে এ বনটি।