সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মারায়ণ তং চূড়ায় হোক তাবুবাস

প্রকাশিত : ০৭:৫৫ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

মারায়ণ-তং-চূড়ায়-হোক-তাবুবাস

মারায়ণ-তং-চূড়ায়-হোক-তাবুবাস

পাহাড়ের নেশা এক অদম্য নেশা। যে নেশার হাতছানি উপেক্ষা করা কঠিন। তবে কর্মজীবনের শত ব্যস্ততার মধ্যেও ক্ষুদ্র অবসরে এই ডাকে সাড়া দিতে হলে চাই ইচ্ছেশক্তি আর যথাযথ পরিকল্পনা। আপনার যদি তেমনটা থাকে, তবে আলীকদমের মারায়ণ তং পাহাড়ের চূড়ায় ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তাব রাখছি।

চটগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ের চকরিয়া থেকে বামদিকে লামা উপজেলা পার হয়ে আলীকদমের রাস্তা। মারায়ণ তং যেতে হলে আলীকদম না গিয়ে আবাসিক নামক জায়গাতেও বাস থেকে নেমে যাওয়া যায়। তবে ক্যাম্পিংয়ের টুকটাক কেনাকাটা বা খাবারের প্রয়োজনে প্রথমে আলীকদমে যাওয়াটাই ভালো। আলীকদম থেকে আবাসিক গাড়িতে ১৫ মিনিটের রাস্তা মাত্র। মারায়ণ তং যাত্রা পথে কোনো পানির উৎস নেই তাই পানি নিচে থেকেই বহন করে নিয়ে যেতে হবে।

আলীকদমের মারায়ণ তং পাহাড়ের চূড়া। ছবি : সংগৃহীত

স্থানীয় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এই পাহাড়টিকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকে। কেউ বলে ‘মারায়ণ তং’, কেউ ‘মারায়ণ ডং’ আবার কেউবা বলে ‘মারাইং তং’। পাহাড়ের ঢাল থেকে সোজা রাস্তা উঠে গেছে এঁকেবেঁকে।

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে আপনার ট্রেকিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই সব ট্রেকাররা হাঁপিয়ে উঠবে। কারণ প্রথম দিকে ঢালুটা সহনীয় হলেও ধীরে ধীরে তা বেশ খাড়া হয়ে উঠেছে। আসলে মাথার উপরের তপ্ত রোদই যেন সব শক্তি শুষে নেবে।

আলীকদমের মারায়ণ তং পাহাড়ের চূড়া। ছবি : সংগৃহীত

এমন কষ্ট করে প্রায় দুই ঘণ্টার ট্রেকিংয়ের পর পৌঁছানো যাবে মারায়ণ তংয়ের চূড়ায়। চূড়ার এক প্রান্ত দখল করে আছে সুবিশাল বুদ্ধমূর্তি। বুদ্ধমূর্তির একটু আগে বিশাল বটগাছের পাশেই রয়েছে আরেকটি ছোট ভিক্ষু মূর্তি। উপর থেকে দেখা যাবে অবারিত সবুজ চিড়ে বয়ে যাওয়া সর্পিল মাতামুহুরী নদী। এ দশ্য আপনারে ভ্রমণের সার্থকতা এনে দেবে।

আলীকদমের মারায়ণ তং পাহাড়ের চূড়া। ছবি : সংগৃহীত

এরপর সন্ধ্যা, অন্ধকার নামার আগেই রান্না, তাঁবুগুলো প্রস্তুতসহ কিছু কাজ করে নিতে হবে আপনাকে। ফটোসেশন করুন, সূর্যাস্ত দেখুন। ক্যাম্প ফায়ারের আগুন জালিয়ে সবাই মিলে গান গাইতে থাকুন। কলার পাতায় সেরে নিন খিচুড়ি মার্কা খাবার। রাতের পাহাড় দেখা শেষ করে টুপ করে ঘুমিয়ে পড়ুন তাবুর পেটে।

আলীকদমের মারায়ণ তং পাহাড়ের চূড়া। ছবি : সংগৃহীত

মারায়ণ তং চূড়ায় এভাবেই করতে পারেন এক রাতের তাবুবাস। নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এ ভ্রমণ সারা জীবন মনে না রেখে উপায় নেই।