পরিচ্ছন্ন ও পর্যটনবান্ধব গ্রাম, নেই চোরের ভয়ও
প্রকাশিত : ০৭:৫৫ পিএম, ৭ ডিসেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
পরিচ্ছন্ন-ও-পর্যটনবান্ধব-গ্রাম-নেই-চোরের-ভয়ও
শীত এলে বান্দরবানে পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। কারণ পাহাড় ভ্রমণের জন্য সেরা সময় হলো শীতকাল। বান্দরবান ভ্রমণে গেলে অবশ্যই দেখে আসুন পরিচ্ছন্ন ও পর্যটনবান্ধব একটি গ্রাম। গ্রামটি হচ্ছে বান্দরবানের রুমা উপজেলার মুনলাই পাড়া। সাঙ্গু নদী বিধৌত বম সম্প্রদায়ের পাড়া এটি। চারদিকে পাহাড় বেষ্টিত। যেন ছবির মতো সুন্দর এই গ্রাম।
বান্দরবান শহর থেকে মাত্র দুই-আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছানো যাবে এই পাহাড়ি গ্রামে। রুমা উপজেলা থেকে ৩ কিলোমিটারের ছোট-বড় পাহাড়ি পথ পেরিয়েই দেখা মিলবে মুনলাই পাড়ার। বগালেকে যাওয়ার পথেই পড়ে এই পাড়া। রাস্তার দুই ধার ঘেঁষা পাড়াটি। সত্যিই সে দৃশ্য অকল্পনীয়! অন্য পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের বসতি বা পাড়ার তুলনায় মুনলাই পাড়া অনেকটা আলাদা।
এরই মধ্যে দেশের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে গ্রামটি। এই গ্রামের বাসিন্দারা দৈনিক অন্তত ১০ মিনিট করে নিজ নিজ বাড়ির চারদিক এমনকি রাস্তাঘাটও পরিষ্কার করেন। সেখানে নেই কোনো বিলাসিতা। প্রতিটি বাড়িই নান্দনিক ও ছিমছাম।
এখানকার কাঠের বাড়িগুলোতে অর্কিডসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। কোনোটা রাখা হয়েছে ঝুলিয়ে, কোনোটি আবার টবে বা মাটিতে। দুই-একটা গাছের পাতা ছাড়া বিশেষ কোনো ময়লা-আবর্জনার নেই রাস্তাগুলোতেও। স্থানীয়রাই নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে এসব রাস্তাঘাট। পুরো পাড়ার কোথাও ময়লা আবর্জনা দেখা যাবে না।
রয়েছে একটি অবাক করার মতো বিষয়, এ গ্রামের বাসিন্দারা কেউ ঘরে কখনোই তালা লাগান না। কারণ, সেখানে চুরি হওয়ার কোনো ভয় নেই। বাসিন্দারা একই পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজেদেরকে ভাবেন। এ কারণে ঘর খোলা রেখেই তারা বাইরে যায়। এ সময় প্রতিবেশিরাই নিজের মনে করে বাড়িটি পাহারা দেন।
১৯৮৩ সালে স্থানীয় ৩০টি বম পরিবার সুনসংপাড়া থেকে এসে জনপ্রতি পাঁচ একর করে জায়গা নিয়ে মুনলাইপাড়ায় বসবাস শুরু করে। এখন ৫৪ পরিবার এই পাড়ায় বসবাস করছে। তারা সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করেন। ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় দেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রামের তকমা পেয়েছে তাদের ছোট্ট মুনলাই পাড়া।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে প্রথমে বান্দরবান পৌঁছাতে হবে। রাতে রওনা হতে পারলে ভালো। তাহলে সকালে বান্দরবান পৌঁছেই সেখান থেকে নাস্তা করে চান্দের গাড়ি করে মুনলাই পাড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করুন। রাস্তায় কোনো সমস্যা না হলে দুপুর ১২টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন মুনলাই পাড়াতে।
থাকা-খাওয়া
মুনলাই পাড়াতে কটেজ আছে। থাকা-খাওয়া সব ওখানেই করতে পারবেন।