পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ ফুলবাড়িয়ার অর্কিড বাগান
প্রকাশিত : ০৪:৫৫ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার
পর্যটকদের-নতুন-আকর্ষণ-ফুলবাড়িয়ার-অর্কিড-বাগান
এখানে প্রায় ৩৭ একরের বিশাল বিস্তৃর্ণ জায়গা জুড়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে অর্কিড বাগান। আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অর্কিড বাগান। এটি দীপ্ত অর্কিড বাগান নামে পরিচিত। বর্তমানে এখানে বিশাল এলাকাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের উৎপাদন হচ্ছে।
পিচঢালা পরিস্কার রাস্তা। বৃষ্টির পর রাস্তা চকচক করছে। ঠান্ডা শীতল পরিবেশ। বিস্তৃত ধানক্ষেত আর লেবু বাগান। চারিদিকে সারিবদ্ধ গাছের ছায়া। রাস্তার দুই পাশের সবুজ শ্যামল প্রকৃতি। ক্ষণে ক্ষণে নাকে এসে লাগছে লেবু পাতার সুভাস। তারই মাঝে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলা। বাকি পথ যেতে যেতে জেনে নিই অর্কিড বাগানের ইতিহাস।
২০০৩ সালে অনেকটা শখের বশে ইত্তেমাদ উদ দৌলা নামের এক ব্যক্তি এ বাগান করেন। প্রথমে দু-তিন একর জমিতে অর্কিড চাষ শুরু করেন। পরে দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে অর্কিডের উৎপাদন শুরু করে দীপ্ত অর্কিড। শুরুর দিকে থাইল্যান্ড থেকে একজন বিশেষজ্ঞ এসে বাগান করতে সহায়তা করেন।
সূর্যটা যখন ঠিক মাথার উপরে পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। রাস্তার পাশেই বাগানটির অবস্থান। চারপাশে ইটের প্রাচীর, মূল ফটকের সামনেই বড় একটি কাঠের তৈরি সাইনবোর্ড। ভেতরে প্রবেশের জন্য কিছু নিয়মকানুন মানতে হয়। সেগুলো শেষ করে ঢুকে গেলাম ভেতরে।
সবুজ গাছপালা দ্বারা বিস্তীর্ণ নির্জন নিভৃত একটি বাগান। চারদিকে পাখির কিচিরমিছির শব্দ। নাম না জানা ছোটবড় বিশাল বৃক্ষের সমাহার। বাগানের উপরে জাল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অর্কিড গাছে ছায়ার ব্যবস্থা। আর নিচে কয়েক ফুট উপরে মাচা তৈরি করা হয়েছে। তার উপরে লোহার নেট দিয়ে মাচা তৈরি করা হয়েছে। মাচার উপরে নারিকেলের ছোবড়া, প্লাস্টিক, মাটির টবে, মাটিতে রোপন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিডের চারা। যতদূর চোখ যায় একই দৃশ্য। সবুজে সবুজে ছেঁয়ে গেছে।
এই সবুজের সমারোহে চোখে পড়লো লাল, হলুদ ও বেগুনি অর্কিডের উপর। নানা রঙের দেশি-বিদেশি ফুল ও ফলগাছ। অর্কিডের পাশাপাশি গোলাপ, জারবেরা ও সবজির বাগান রয়েছে। কোথাও লাল, কোথাও সাদা, কোথাও হলুদ; আবার কোথাও বেগুনি ফুলের গাছ। দেখতে অনেকটা টিউলিপ বাগানের মতো।
এই বাগানে ২৫ ধরনের প্রজাতির অর্কিডের চাষ হয়। বর্তমানে বাগানে প্রায় ৩ লাখের অধিক অর্কিডের চারা রয়েছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় হলো ডেনড্রোবিয়াম হোয়াইট, ডেনড্রোবিয়াম সোনিয়া, ডেনড্রোবিয়াম সাকুলা পিংক ও ডেনড্রোবিয়াম সাতু পিংক। এছাড়া রয়েছে মোকারা নুরা ব্লু প্রজাতির অর্কিড। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে প্রশান্তির জন্য এখানে ঘুরতে আসতে পারেন পরিবার নিয়ে। তার জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
যেভাবে যাবেন:
সড়ক বা রেলপথে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আসতে হবে প্রথমে। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এনা, শামীম এন্টারপ্রাইজ, সৌখিনসহ কয়েকটি পরিবহন রয়েছে এই রোডে। সময় লাগবে আড়াই থেকে চার ঘণ্টা। এছাড়াও কমলাপুর বিআরটিসি বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-নেত্রকোণা রুটের গাড়িতেও ময়মনসিংহে আসতে পারবেন। তবে আলম এশিয়া বাসে গেলে সরাসরি ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে নামতে পারবেন। মাসাকান্দা বাসস্ট্যান্ডে অথবা শহরের ব্রিজ মোড়ে নেমে বাস বা সিএনজি অটোরিকশা করে আসতে হবে ফুলবাড়িয়া। সেখান থেকে সিএনজি বা অটোরিকশাতে যাওয়া যাবে অর্কিড বাগানে।
এছাড়া ঢাকা থেকে বাসে