অপরূপ টাঙ্গুয়ার হাওর ঘোরার সেরা সময় এখনই
প্রকাশিত : ০৪:৫৫ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার
অপরূপ-টাঙ্গুয়ার-হাওর-ঘোরার-সেরা-সময়-এখনই
দেশের অন্যতম সুন্দর ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর। আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট এটি। অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর স্বচ্ছ জলের স্বর্গরাজ্য! বর্ষা ও শীত—এই দুই মৌসুমে দুই রকমের সৌন্দর্যে অপরূপ হয়ে ওঠে এই হাওর। তবে পর্যটকদের মতে, এই হাওর তার আসল সৌন্দর্যে সাজে বর্ষাকালে।
ভারতের মেঘালয়ের পাহাড় থেকে প্রায় ৩০টি ঝরনা এসে সরাসরি মিশেছে হাওরের পানিতে। সারি সারি হিজল-করচ শোভিত, পাখির কলকাকলিতে মুখর এক অপরূপ সৌন্দর্যের আধার। মাছ, পাখি এবং নানান প্রজাতির জলজ প্রাণীর এক বিশাল অভয়াশ্রম। জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ মিঠাপানির এ হাওরের আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ৩০ হাজার একর।
টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রবেশ মুখেই দেখা যায় সারি সারি হিজল গাছ। মূল হাওরে পানির নিচের দিকে তাকালে দেখা মিলবে হরেক রকম জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্মের। হাওরের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। ওয়াচ টাওয়ারের নিচেই সারি সারি হিজল করচের গাছ দাঁড়িয়ে থাকে সারা বছর।
হাওরের উত্তর পাশে টেকেরঘাটে রয়েছে স্বচ্ছ নীল জলের শহীদ সিরাজ লেক। একপাশে মেঘালয়ের সুউচ্চ পাহাড়, আরেক পাশে ছোট ছোট সবুজ টিলা। মাঝখানে নীল জলের এ লেকটি অসাধারণ সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতীক। টেকেরঘাট থেকে মোটরসাইকেলে করে আধাঘণ্টার দূরত্বে রয়েছে বারিক্কা টিলা। যাদুকাটা নদীর তীরে এই পাহাড়টি বাংলাদেশ অংশে, এখান থেকে যাদুকাটার অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।
হাওরে ঘোরার সেরা সময় এখনই। পানিতে থই থই করছে চারদিক। চাইলে নৌকা থেকে নেমে লাইফ জ্যাকেট পরে সাবধানতার সঙ্গে ভেসে বেড়ানো যায় পানিতে, আর উপভোগ করা যায় আশপাশের সবুজের মহিমা। কিছু কিছু জায়গায় এই হাওরের পানি এতটাই স্বচ্ছ যে পানির নিচের জলজ উদ্ভিদ কিংবা মাছ দেখা যায় খালি চোখেই।
ঘুরতে হলে মানতে হবে নিয়ম
তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট, বারেকাটিলা, নীলাদ্রিসহ পর্যটন এলাকায় জনসমাগমের ওপর ১০টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির। নির্দেশনাগুলো হলো-
* হাওর কিংবা নদীতে যাত্রা শুরুর অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে নির্ধারিত ফরমে তাহিরপুর থানা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নৌযানের নাম, পর্যটকের সংখ্যা, যাত্রা ও ফেরার সময় উল্লেখসহ লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।
* টাঙ্গুয়ার হাওরে চলাচলকারী কোনো নৌযান অতিরিক্ত পর্যটক বা যাত্রী বহন করতে পারবেন না।
* ভ্রমণের সময় নৌযানের চালক ও পর্যটকদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। বিশেষ করে হাওরে কিংবা নদীতে কোনো পর্যটক লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নামতে পারবেন না।
* বিরূপ আবহাওয়া থাকলে হাওর কিংবা নদীতে ভ্রমণ করা যাবে না।
* করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভ্রমণের সময় সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
* প্রতিটি নৌযানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ডাস্টবিন স্থাপন করতে হবে।
* নির্ধারিত স্থান ছাড়া হাওর বা নদীর কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না।
* পর্যটকবাহী নৌযানে উচ্চস্বরে মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না।
* প্রতিটি নৌযানে পর্যটকদের জন্য মানসম্মত পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
* ভ্রমণকালে পর্যটকরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করবেন এবং নিজেদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন।