সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

টেক্সাসে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত : ১২:০০ এএম, ৭ এপ্রিল ২০২১ বুধবার

টেক্সাসে-একই-পরিবারের-৬-বাংলাদেশির-মরদেহ-উদ্ধার

টেক্সাসে-একই-পরিবারের-৬-বাংলাদেশির-মরদেহ-উদ্ধার

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় পুরো যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

পুলিশ বলছে, শনিবার কোনো একটি সময় এই হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। তবে ঘটনাটি সবাই জানতে পেরেছে সোমবার সকালে। 

টেক্সাসের এই বাড়িতেই ঘটে নৃশংস ঘটনাটি - সংগৃহীতটেক্সাসের এই বাড়িতেই ঘটে নৃশংস ঘটনাটি - সংগৃহীত

প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, পরিবারের দুই ছেলে অন্য সদস্যদের হত্যা করে নিজেরা আত্মহত্যা করেছেন। তবে এখনো ঘটনার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নিহতরা হলেন- ১৯ বছর বয়সী যমজ ভাই-বোন ফারহান তৌহিদ ও ফারবিন তৌহিদ, বড় ভাই তানভীর তৌহিদ (২১), মা আইরিন ইসলাম (৫৬), বাবা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪) ও তানভীর তৌহিদের নানি আলতাফুন্নেসা (৭৭)।

মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই বাড়ির সামনে ভিড় করেন প্রতিবেশীরামৃত্যুর খবর পেয়ে ওই বাড়ির সামনে ভিড় করেন প্রতিবেশীরা

জানা যায়, টেক্সাসের ডালাসের অ্যালেন হোমে বসবাস করতেন বাংলাদেশি দম্পতি তাওহীদুল ইসলাম ও আইরিন ইসলাম। তাদের দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। আইরিন ইসলামের মা আলতাফুন নেসা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন মেয়ের কাছে থাকার জন্যে। গত সপ্তাহে দেশে ফেরার কথা থাকলেও, করোনার কারণে আটকা পড়েছিলেন। 

পুলিশ মুখপাত্র সার্জেন্ট জন ফেল্টি বলেন, প্রাপ্ত তথ্য বলছে- তাওহীদুল ইসলামের দুই ছেলে নিজেরা ঠিক করেছিলেন যে তারা আত্মহত্যা করবেন। সেই সঙ্গে পুরো পরিবারকেও তারা মেরে ফেলবেন। সে অনুযায়ী তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন। মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছেন ১৯ বছর বয়সী ছোট ছেলে ফারহান তাওহীদ। যেখানে তিনি নিজেকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে উল্লেখ করেছেন। কেবল তাই নয়, পুলিশ বলছে, এই দুই ভাইয়ের একজন সম্প্রতি বন্দুক কিনেছিলেন।

ফারবিন তৌহিদ, তানভীর তৌহিদ ও ফারহান তৌহিদ। ছবি: সংগৃহীতফারবিন তৌহিদ, তানভীর তৌহিদ ও ফারহান তৌহিদ। ছবি: সংগৃহীত

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্সটাগ্রামে দীর্ঘ একটি সুইসাইড নোটে ফারহান লিখেন- ২০১৬ সালে  নবম গ্রেডে পড়াবস্থায় আমি বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়েছি বলে চিকিৎসক জানায়। এজন্যে আমি পরীক্ষায় ফেল করেছি। আজ আমি নিজের শরীর দু’বার কেটেছি। খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমার মনে আছে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট, কাঁচির মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরে কেটেছিলাম। অনুভব করেছি কতটা অসহনীয় যন্ত্রণা। এরপর প্রায় দিনই শরীরে রান্নাঘরের চাকু দিয়ে কেটেছি। বিষণ্ণতার দুঃখবোধ লাঘবের পথ খুঁজেছি। এ অবস্থায় আমার ঘনিষ্ঠ তিন বন্ধু আমাকে ত্যাগ করেছে। এমনি হতাশার মধ্যেই আমাকে ভর্তি করা হয় ইউনিভার্সিটি অব অস্টিনে কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে। এরপর আমি ভেবেছি যে, এবার জীবনটা সঠিক ট্র্যাকে উঠেছে। বাস্তবে তা ঘটেনি। বিষণ্ণতায় জর্জরিত হয়ে পুনরায় আমি নিজের শরীর রক্তাক্ত করি এবং কাঁদতে কাঁদতে বিছানায় ঘুমাতে যাই। সান্ত্বনা খুঁজি যে, আমি সুস্থ হয়েছি। অন্যদের মতই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি সত্য বলে কখনোই মনে হয়নি।

গুগল ড্রাইভে দীর্ঘ একটি সুইসাইড নোট লিখে ইন্সটাগ্রামে লিঙ্ক দিয়ে দেয় ফারহান - সংগৃহীতগুগল ড্রাইভে দীর্ঘ একটি সুইসাইড নোট লিখে ইন্সটাগ্রামে লিঙ্ক দিয়ে দেয় ফারহান - সংগৃহীত

আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে গোটা পরিবার সারাটি জীবন কষ্ট পাবে। সেটি চাই না। সেজন্যে পরিবারের সকলকে নিয়ে মারা যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বড়ভাইকে সামিল করলাম। দু’ভাই গেলাম বন্দুক ক্রয় করতে।  আমি হত্যা করবো ছোটবোন আর নানীকে। আমার ভাই করবে মা-বাবাকে। এরপর উভয়ে আত্মহত্যা করবো। কেউ থাকবে না কষ্ট পাবার।

আত্মহত্যার প্রাক্কালে লেখা ওই নোটে সে আরো উল্লেখ করেছে, বন্দুক ক্রয়ের ব্যাপারটি এখানে খুবই সহজ। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনের নামে তামাশা চলছে সর্বত্র। বড়ভাই গেলেন দোকানে। বললেন যে, বাড়ির নিরাপত্তার জন্যে বন্দুক দরকার। দোকানি কয়েক