শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৪ ১৪৩১   ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না গরুর মাংস

প্রকাশিত : ০৮:৪৫ পিএম, ৮ মে ২০১৯ বুধবার

বেঁধে-দেয়া-দামে-মিলছে-না-গরুর-মাংস

বেঁধে-দেয়া-দামে-মিলছে-না-গরুর-মাংস

পবিত্র  রমজান মাস উপলক্ষে সিটি কর্পোরেশন গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই বেঁধে দেয়া দামে গরুর মাংস মিলছে না রাজধানীর কোথাও।

বুধবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মাংসের দোকান ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।  দেখা যায়, গরুর মাংসের দাম ৫২৫ টাকা কেজি দাম নির্ধারণ করে দেয়া হলেও বিক্রেতারা ৫৫০ টাকার কমে কোথাও বিক্রি করছে না। 

এর আগে গেলে সোমবার নগর ভবনে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন রমজান মাসের জন্য সব ধরনের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেন। সভায় প্রতি কেজি দেশি গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৫২৫ টাকা, ভারতীয় সাদা বোল্ডার গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, খাসির মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকা, মহিষের মাংস ৪৮০ টাকা, আর প্রতি কেজি ভেড়ার মাংসের দাম ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু বুধবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোন বিক্রেতাই বেঁধে দেয়া দামে মাংস বিক্রি করছেন না। মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৫৫০ টাকার কমে মিলছে না গরুর মাংস। কেউ কেউ আবার ৫৬০ থেকে ৫৭০ টাকাও চাইছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাংস বিক্রেতা কোরবান আলী বলেন, আমরা সিটি কর্পোরেশনের বেঁধে দেয়া দামেই মাংস বিক্রি করছি। তখন তার সামনেই ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলে জানান, তিনি ৫৬০ টাকা কেজি মাংস নিয়েছেন। তখন বিক্রেতা  বলেন, উনি শুধু সিনার মাংস নিয়েছেন। তাই দাম একটু বেশি রাখা হয়েছে। সব জায়গার মাংস মিশিয়ে নিলে ৫২৫ টাকা কেজিই রাখা হচ্ছে।

তার পাশের দোকানি রহিম ব্যাপারীর দোকানেও ৫৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই গরুর মাংসের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাদের যে পরিমাণ মাংস দরকার প্রতিদিন, সেই চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না। আর খরচও বেড়ে গেছে। তাই কিছুটা বেশি দাম রাখতে হচ্ছে। 

এ সময় মোহসিন রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, সিটি কর্পোরেশন দেশি গরুর মাংসের দাম ঠিক করে দিয়েছে ৫২৫ টাকা। কিন্তু অধিকাংশ দোকানেই ভারতীয় গরুর মাংস দেশি বলে বিক্রি করছে। অথচ সেটা ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করার কথা। 

তবে খাসির মাংসের দাম একেক বাজারে একেক রকম দেখা গেছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে ৭২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটের একটি দোকানে। অপর একটি দোকানে আবার দেখা যায় ৭৬০ টাকা কেজি বিক্রি করতে। একই অবস্থা হাতিরপুল ও পলাশী বাজারেও। তবে কারওয়ান বাজারে নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস। মহিষ ও ভেড়ার মাংসের ক্ষেত্রেও তেমন তারতম্য চোখে পড়েনি।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক শফিকুল ইসলাম লস্কর বলেন, প্রথম রোজার দিন থেকেই ভোক্তা অধিদফতরের মনিটরিং টিম বিভিন্ন এলাকায় তদারকি করছে। মঙ্গলবার কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের টাউনহল, কৃষি মার্কেট ও খিলগাঁওয়ে তদন্ত দল পরিদর্শনে যায়। ওই দিন কারওয়ানবাজার ও মোহাম্মদপুরে নির্ধারিত দামেই মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়। 

এদিকে খিলগাঁওয়ে নিয়ম না মানায় কয়েকটি দোকানের মালিককে জরিমানা করা হয়। বুধবারও কেরাণীগঞ্জ, মহাখালী ও পান্থপথের বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালানো হয়। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। বুধবার মোহাম্মদপুরের টাউনহলে বেশি দামে বিক্রির কথা জানালে তিনি বলেন, এমনটি ঘটলে আগামীকাল (আজ) আবারো সেখানে টিম পাঠাব।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, দুই দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় ভোজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছি। বুধবার অভিযানে গরুর মাংসের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এদিন বেশি দামে বিক্রি করার দায়ে সেগুনবাগিচায় একটি মাংসের দোকানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধে কাকরাইলের আগোরা সুপার শপ ও মগবাজারের বেঙ্গল মিটকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।



দৈনিক প্রভাতী/এসএস/জেডআর