শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৬ ১৪৩১ |   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাফের মুকুটজয়ী রুপনা-ঋতুপর্ণার জন্য সড়ক ও সেতু পাচ্ছেন এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩ ১১ ০১  

সাফের-মুকুটজয়ী-রুপনা-ঋতুপর্ণার-জন্য-সড়ক-ও-সেতু-পাচ্ছেন-এলাকাবাসী

সাফের-মুকুটজয়ী-রুপনা-ঋতুপর্ণার-জন্য-সড়ক-ও-সেতু-পাচ্ছেন-এলাকাবাসী

সাফ জয় করেছেন রাঙামাটির দুই ফুটবলার রুপনা-ঋতুপর্ণা। তাদের এ কীর্তিতে সুফল হিসেবে এবার সড়ক ও সেতু উপহার পাচ্ছেন এলাকাবাসী।

বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার বাড়িতে যাওয়ার সড়ক ও বাঁশের সাঁকোর স্থানে সেতু এবং ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়ি যাওয়ার সড়ক তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এমন ঘোষণা শুনে এলাকার মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সম্প্রীতি সমাবেশে রুপনার বাড়ির সড়ক-সেতু এবং ঋতুপর্ণার বাড়ির সড়ক তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।

তিনি বলেছেন, রুপনা এবং ঋতুপর্ণার বাড়ি যাওয়ার সড়ক ও সেতু দ্রুত তৈরি করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তাদের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সাফের মুকুটজয়ী রুপনার বাড়ি নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ভূঁইয়া আদাম গ্রামে। ঋতুপর্ণার বাড়ি কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নে মগাছড়ি গ্রামে। বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো পার হয়ে মেঠোপথে যেতো হয় ভূঁইয়া আদাম গ্রামে। গ্রামের ভাঙাচোরা কুঁড়েঘরে বেড়ে উঠেছেন সাফজয়ী রুপনা।

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঘাগড়া ইউনিয়ন থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ধানক্ষেত, ছড়া ও পাহাড় পেরিয়ে যেতে হয় মগাছড়ি গ্রামে। গ্রামের একটি টিনশেড ঘরে বেড়ে উঠেছেন ঋতুপর্ণা। বর্ষা মৌসুমে পথ চলতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় মগাছড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের। বারবার সড়কের আবেদন করলেও সাড়া মেলেনি।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক তাদের বাসায় উপহার নিয়ে যান। তখন সড়ক ও সেতুর জন্য তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ এবং সংগ্রামের কথা জানতে পারেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসককে ঋতুপর্ণার মা বসুমতি চাকমা বলেন, আমার মেয়ে দেশের জন্য ভালো খেলেছে তাতে আমিসহ গ্রামবাসী আনন্দিত। আমাদের বাড়ির রাস্তা নেই। বাড়িতে আসা-যাওয়ায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঋতু ছুটিতে যখন বাসায় আসে তখন প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে আসতে হয়। রাস্তাটি করে দিলে মগাছড়ি এলাকার মানুষের অনেক উপকার হবে।

একই দিন রুপনার মা কালাসোনা চাকমা জেলা প্রশাসককে বলেন, মেয়ের সাফল্যে অনেক খুশি হয়েছি। গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে। আমরা ছোট একটি ভাঙা ঘরে থাকি। একটি ঘর করে দিলে খুব খুশি হবো। পাশাপাশি গ্রামের বাঁশের সাঁকোর স্থলে সেতু ও সড়কটি করে দিলে আমরা উপকৃত হবো।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রুপনা ও ঋতুপর্ণা আমাদের গর্বিত করেছে। রুপনার পরিবারের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার এলাকার সড়ক-সেতু এবং ঋতুপর্ণার বাড়িতে যাওয়ার সড়কটি দ্রুত তৈরি করে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, তাদের পরিবারের পাশে আমরা আছি। তাদের পরিবারের জন্য যা যা করার দরকার সবই করা হবে। এরইমধ্যে বাঁশের সাঁকোর স্থলে সেতু, কাঁচা সড়কের স্থলে পাকা সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে।

ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন বলেন, ঋতুপর্ণা শুধু এই ইউনিয়নের নয়; সারা দেশের গর্ব। তার বাড়িতে যাওয়ার সড়কটি দ্রুত করে দেবো আমরা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে।

সড়ক ও সেতু নির্মাণের খবর শুনে খুশি হয়ে রুপনার মা কালাসোনা চাকমা বলেন, এরমধ্য দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কেটে যাবে। সড়ক ও সেতু হলে গ্রামবাসীর কষ্ট দূর হবে। এজন্য আমি অনেক খুশি হয়েছি।

ঋতুপর্ণার মা বসুমতি চাকমা বলেন, আমাদের বাড়ি আসার সড়কটি তৈরি করে দেওয়ার খবর শুনে খুশি হয়েছি। অবশেষে আমাদের কষ্ট দূর হচ্ছে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী