শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১ |   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শুভ জন্মদিন রুপালি গিটারের জাদুকর

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২২ ০১ ০১ ০১  

শুভ-জন্মদিন-রুপালি-গিটারের-জাদুকর

শুভ-জন্মদিন-রুপালি-গিটারের-জাদুকর

ছোটবেলা থেকে গিটারের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। সেই ভালোবাসা থেকে বন্ধুদের নিয়ে গড়ে ছিলেন  এলআরবি নামের একটি ভিন্ন ধারার ব্যান্ড দল। সকল শ্রেণীর সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে যায়গা করে নিয়ে ছিলেন অল্প সময়ের ভেতরে। আনন্দ-বেদনা, বিরহ-প্রেমে তার গানের সঙ্গে কথা বলেননি এমন মানুষ আমাদের দেশে খুব কমই আছে। বলছি রুপালি গিটারের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চুর কথা। আজ এই উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পীর জন্মদিন।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নন্দিত ব্যান্ড তারকা ও গিটার লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর। তার বাবার নাম ইসহাক চোধুরী এবং মা নুরজাহান বেগম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন সবার বড়। তিনি একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মেছিলেন। পরিবারের সবাই ছিলেন ধার্মিক। তাই তার সংগীতকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়াটা পরিবারের কেউই গ্রহণ করেননি।

১৯৭৫ সালে স্কুলে পড়াকালীন আইয়ুব বাচ্চু গিটার বাজানো শিখেছিলেন জেকব ডায়াজ নামে এক বার্মিজের কাছে। যিনি তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রামে থাকতেন। এরপর ১৯৭৮ সালে কলেজ জীবনে সহপাঠীদের নিয়ে ‘গোল্ডেন বয়েজ’ নামে একটি ব্যান্ডদল গড়েন। পরে সেটির নাম বদলে হয় ‘আগলি বয়েজ’। সেই দলের গায়ক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ আর গিটার বাজাতেন আইয়ুব বাচ্চু। সে সময় তারা মূলত পটিয়ায় বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে ও শহরের ক্লাবগুলোতে গান করতেন।

১৯৮০ সালে আইয়ুব বাচ্চু ও কুমার বিশ্বজিৎ একসঙ্গে দেশের জনপ্রিয় এবং পুরনো ব্যান্ডদল ‘সোলস’-এ যোগ দেন। তার প্রথম গাওয়া গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাচ্চু সোলস ব্যান্ডের সঙ্গে থাকতে পেরেছিলেন। কারণ ওই বছরই দলটি ভেঙে যায়। পরের বছর তিনি ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড’ অর্থাৎ এলআরবি ব্যান্ডদল গঠন করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই দলটির মেইন ভোকাল ছিলেন।

ব্যান্ড এলআরবির মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতকে এগিয়ে নিতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। অসংখ্য জনপ্রিয় গান এ ব্যান্ডের মাধ্যমে উপহার দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি একক ক্যারিয়ারেও পেয়েছেন আকাশছোঁয়া সফলতা। গাওয়ার পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও সফল ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। একইসঙ্গে একাধারে গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক এবং গায়ক।

তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তবে তার সফলতা শুরু হয় দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’র মাধ্যমে। এদিকে আইয়ুব বাচ্চুর এলআরবি ১৯৯২ সালে ‘এলআরবি ১’ এবং ‘এলআরবি ২’, বাংলাদেশের প্রথম ডবল অ্যালবাম প্রকাশ করেছিল। তাদের তৃতীয় অ্যালবাম ‘সুখ’ (১৯৯৩) ছিল অন্যতম ব্যবসা সফল অ্যালবাম।

৪০ বছরের গায়কী জীবনে ১২টি ব্যান্ড, ১৬টি একক ও বহু মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে আইয়ুব বাচ্চুর। এসবের পাশাপাশি গান গেয়েছেন বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও। তার অসংখ্য দর্শকপ্রিয় গানের তালিকায় ‘সুখ’, ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘ফেরারি মন’, ‘এই রুপালি গিটার’, ‘হাসতে দেখো’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘চলো বদলে যাই’ সহ আছে বহু নাম।

২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর আইয়ুব বাচ্চু হঠাৎ করেই তার অগণিত ভক্ত-শ্রোতাকে কাঁদিয়ে চিরতরে চলে যান না ফেরার দেশে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী