শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১ |   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাদারীপুরে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে নির্যাতন

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬ ০৪ ০২  

মাদারীপুরে-যৌতুকের-জন্য-গৃহবধূকে-নির্যাতন

মাদারীপুরে-যৌতুকের-জন্য-গৃহবধূকে-নির্যাতন

মাদারীপুরের সদর উপজেলায় যৌতুকের জন্য কেয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। 

রোববার দুপুরে উপজেলার দক্ষিন দুধখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত কেয়া আক্তারকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

আহত কেয়া আক্তার মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউপির দক্ষিণ দুধখালী এলাকার হিরু সরদারের মেয়ে। তিনি একই এলাকার ইতালী প্রবাসী রিপন মোল্লার স্ত্রী। 
 
ভুক্তভোগী ও স্বজনরা জানান, গত ৩ বছর আগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় কেয়া ও রিপন মোল্লার। বিয়ের ৬ মাস পর রিপন মোল্লা ইউরোপের দেশ ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। ইতালি যাওয়ার পরে ২ মাস যোগাযোগ রেখেছিলেন স্ত্রী কেয়ার সঙ্গে। আসতে আসতে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় রিপন মোল্লা। এদিকে কেয়ার কোল জুড়ে জন্ম নেয় একটি মেয়ে সন্তান। মেয়ে হওয়ার খবর রিপনকে দিতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রিপন। এর পর থেকেই সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্ত্রী কেয়ার সঙ্গে।

এদিকে কেয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করতে থাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। যৌতুকের জন্য চাপও দিতে থাকে তারা, এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে কেয়ার বাবা হিরু সরদার ৫ লাখ টাকাও তুলে দেন মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের হাতে। টাকা নেয়ার পরেও তারা আবারো টাকার দাবি করেন। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কেয়াকে তার শ্বশুর আব্দুল হাই মোল্লা, শাশুড়ি আবেরজান বেগম ও মেজো ভাসুর মৃণাল মোল্লা মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। এ ঘটনায় কেয়ার পরিবার মাদারীপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। 

আহত কেয়া আক্তার বলেন, আমার মেয়ে হাফিজা হওয়ার পর থেকে আমার স্বামী রিপন মোল্লা যোগাযোগ করেন না। শ্বশুর বাড়ির লোকজন বার বার টাকা চায় আমার পরিবারের কাছে। আমার বাবা কয়েকবার টাকাও দিয়েছে। এখন তারা আরো টাকা চাইলে না করায় আমাকে মারধোর করে। তারা বলেন আমাকে নাকি আমার স্বামী তালাক দিয়ে দিয়েছে। তালাক দিয়ে থাকলে আমার কাছে তো কোনো নোটিশ আসেনি। রোববার আমি এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আমার শ্বশুর, শাশুড়ি আর মেজো ভাসুর আমাকে প্রচুর মারধর করেন। আমার মেয়েকে নিয়ে এখন আমি কোথায় যাবো। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভুক্তভোগী কেয়ার ছোট চাচা রবিউল সরদার বলেন, বিয়ের পর রিপন বিদেশে চলে যাওয়ার পর থেকেই আমার ভাতিজি কেয়ার ওপর নির্যাতন চালায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তারা শুধু বার বার যৌতুক চায়। যৌতুক না দেওয়ায় এখন কেয়াকে গ্রহণ করতে চায় না। গতকাল আমার ভাতিজিকে অনেক নির্যাতন করেছে। আমরা আইনের কাছে বিচার দাবি করি। 

ঘটনার পর থেকে আব্দুল হাই মোল্লা, আবেরজান বেগম ও মৃণাল মোল্লা পলাতক থাকায় ও তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী