একজন ক্ষণজন্মা কিংবদন্তি’র কথা
একজন-ক্ষণজন্মা-কিংবদন্তির-কথা
জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার সম্পূর্ণ নাম ছিলো মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ। তিনি প্রাথমিক শিক্ষার পর্ব শেষ করেন কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউট এবং পরবর্তীতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাবা-মার সাথে কলকাতা ছেড়ে বাংলাদেশে নিজ গ্রামে চলে আসেন তিনি। ১৯৪৯ সালে সাহিত্য ম্যাগাজিনে তার প্রথম কবিতা ‘ওদের জানিয়ে দাও’ প্রকাশিত হয়। ১৯৫০ সালে ফেনীর আমিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে এখান থেকে আইএসসি পাস করেন জহির। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন কিন্তু সেখানে পড়ালেখা চালিয়ে না গিয়ে চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানে তিনি বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন।
জহির রায়হান মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৫৭ সালে ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ চলচ্চিত্র দিয়ে পা রাখেন সিনেমা জগতে। তারপর এক যুগ ধরে ‘সোনার কাজল (১৯৬২), ‘কাঁচের দেয়াল’ (১৯৯৩), ‘সঙ্গম’ (উর্দ: ১৯৬৪), ‘বাহানা’ (১৯৬৫), ‘বেহুলা’ (১৯৬৬), ‘আনোয়ারা’ (১৯৯৬৭), আর ‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০)’র মতো অসাধারণ সব চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন।
জহির রায়হানতিনি শুধু প্রতিভার স্বাক্ষর চলচ্চিত্রে রাখেননি, রেখেছেন সাহিত্যেও। স্কুল জীবন থেকেই লিখতে ভালোবাসতেন। তার লেখা গল্প, কবিতা ছাপা হত পত্রিকায়। তার প্রথম উপন্যাস ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ প্রথমে সাপ্তাহিক ‘চিত্রালী’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় জহির রায়হানের জীবনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’। সাহিত্যিক হিসেবে তার একমাত্র পুরস্কারপ্রাপ্তিও এই উপন্যাসের কল্যাণে। বাংলাদেশের আবহমান গ্রামীণ জীবন নিয়ে লেখা এই উপন্যাসটিকে ২০০৫ সালে সুচন্দা চলচ্চিত্ররূপ দেন। জহির রায়হানের পরবর্তী উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুন’। এই উপন্যাসটি ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে রচিত। ছোট গল্পকার হিসেবে অসম্ভব শক্তিশালী ছিলেন জহির রায়হান। নিজেই ‘জহির রায়হানের একশ’ গল্প নামে একটি গল্প সংকলন প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও, সেটি আর শেষ করতে পারেনি তিনি।
কৈশোরকাল থেকেই সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টির সাথে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। কমরেড মণি সিংহ তার নাম পাল্টে জহির রায়হান রাখেন। ভাষা আন্দোলনের সময় প্রথম যে দশজনকে গ্রেফতার করা হয়, জহির রায়হান ছিলেন তাদের মাঝে অন্যতম। ভাষা আন্দোলনের ঝড় সদ্য কলেজে ভর্তি হওয়া জহিরকে পাল্টে দেয়। তার পরবর্তী সৃষ্টিতে তাই বারংবার ভাষা আন্দোলন ফিরে এসেছে। ড. হুমায়ুন আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘জহির রায়হান সম্ভবত বাংলাদেশের একমাত্র কথাসাহিত্যিক যার উদ্ভবের পেছনে আছে ভাষা আন্দোলন। যদি বায়ান্ন’র একুশ না ঘটতো তবে জহির রায়হান হয়তো কথাশিল্পী হতেন না।’
ব্যক্তিগত জীবনে জহির রায়হান দুবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৬১ সালে তিনি সুমিতা দেবীকে বিয়ে করেন এবং তার সাথে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর ১৯৬৮ সালে জহির সুচন্দাকে বিয়ে করেন। তাঁর দুই স্ত্রীই ছিলেন নামকরা অভিনেত্রী। সুমিতা এবং জহিরের সংসারে দুই পুত্রসন্তানের জন্ম হয় যাদের নাম বিপুল রায়হান এবং অনল রায়হান। সুচন্দা এবং জহির রায়হানের একটিই পুত্র, তপু রায়হান।
জহির রায়হানের মৃত্যু কিংবা অন্তর্ধান একটি রহস্যজনক ঘটনা। বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারান এই সম্ভাবনাময় সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের নিধন করে একটি পঙ্গু স্বাধীন রাষ্ট্র ফেলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ ডিসেম্বর গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনির চৌধুরী, আনোয়ার পাশা প্রমুখসহ আরো ১১১০ জন বুদ্ধিজীবীর সাথে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় শহিদুল্লাহ কায়সারকে। বাংলা সাহিত্যের আরেক উজ্বল নক্ষত্র শহিদুল্লাহ কায়সার ছিলেন জহির রায়হানের বড় ভাই।
ভাই শহিদুল্লাহ কায়সার মারা গেছেন না তাকে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না পরিবারে কেউ। স্বাধীনতার একেবারে পূর্ব মুহূর্তে এতো বড় শোক সামলে উঠতে পারেননি তারা। তাই যখন জহির রায়হানের কাছে একটি ফোনকল আসে যে মিরপুরেরই কোন একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে শহিদুল্লাহকে, তখন ভাই বেঁচে আছে এই আশাতেই ছুটে চলে যান জহির রায়হান। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়ে গেলেও সম্পূর্ণ দেশ কিন্তু তখনো শত্রুমুক্ত হয়নি। বিশেষ করে মিরপুরের এলাকাগুলো বিহারি অধ্যুষিত হওয়ায় স্থানীয় বিহারি এবং মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের সহায়তা করা বিহারিদের মধ্যে এক ধরণের আঁতাত হয় ঐ এলাকাটিতে। ধারণা করা হয় তার পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ষড়যন্ত্রের শিকার হন জহির রায়হান।
‘ভোরের কাগজ’ পত্রিকায়সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া জহির রায়হানকে নিয়ে একটি অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। একই বছর জহির রায়হানের ছেলে অনল রায়হান ‘সাপ্তাহিক ২০০০’ এর ১৩ আগস্ট সংখ্যার জন্য একটি কভার স্টোরি লেখেন যার শিরোনাম ছিল ‘পিতার অস্থির সন্ধানে’। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনল রায়হান খুঁজে বের করেন একজন প্রত্যক্ষদর্শীকে। এই প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বাংলাদেশ আর্মির একজন সাবেক সৈনিক আমির হোসেইন। আমিরের ভাষ্যমতে, ক্যাপ্টেন হেলাল মুর্শিদ খানের নেতৃত্বে এক প্লাটুন সামরিক সৈন্যের সাথে মিরপুরের এক বাড়িতে যান জহির রায়হান। ভাইয়ের খোঁজে উপস্থিত একমাত্র পারিবারিক সদস্য হিসেবে সাথে রাখা হয় তাকে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাড়িটিতে তারা পৌঁছানো মাত্র চারদিক থেকে গুলি বর্ষণ করে বিহারি মুসলিম শরণার্থীরা। স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে সব অস্ত্র তখনো সংগ্রহ করতে পারেনি সদ্য স্বাধীন দেশটির সামরিক বাহিনী। কাজেই বিহারিদের কাছে লুণ্ঠিত বা অবৈধ অস্ত্রের কোনো অভাব ছিল না। আমির দেখেন কয়েক রাউন্ড গুলি ঝাঁঝরা করে দিয়ে যায় জহির রায়হানের শরীর। জুলফিকারের আলী মানিকের রিপোর্টেও একই কথা বলা হয়।
ঘটনাস্থলে নিহত হন প্রায় ৪২ জন সামরিক সদস্য। বাকিরা মারাত্মক আহত অবস্থায় ফিরে আসেন। লোকবল কম থাকায় পাল্টা কোনো অপারেশনে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না বাংলাদেশি সামরিক সেনাদের পক্ষে। বিনা প্রস্তুতিতে এমন হামলায় কোনমতে প্রাণ নিয়ে বেঁচে আসা সৈনিকরা পরদিন পূর্ণ প্রস্তুতিতে আবার রেকি করেন ঐ মিরপুরের সেই বাড়িটি। কিন্তু সেখানে গিয়ে ৩-৪ জন সৈনিকের মৃতদেহ ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাননি তারা। জহির রায়হানের কোনো চিহ্নও সেখানে ছিল না। তাই জহির রায়হান মারা গেছেন না তাকে কোথাও আটকে রাখা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর খোঁজাখুঁজি চলেছে দীর্ঘ ২৮ বছর যাবত। পরবর্তীতে অনল রায়হানের এই প্রতিবেদনে সবাই বুঝতে পারেন যে জহির রায়হান আর বেঁচে নেই। তারপরও প্রতি বছর ৩০ জানুয়ারি দিনটিকে জহির রায়হানের প্রয়াণ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
জহির রায়হান যখন হারিয়ে যান কিংবা মারা যান তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩৬বছর। এই ৩৬বছরের ক্ষনজন্মা মানুষটি বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে রেখেছেন অসামান্য অবদান। আজ এই প্রতিভাধর বাংলা কিংবদন্তির প্রয়াণ দিবস। প্রয়াণ দিবসে জহির রায়হানকে দৈনিক প্রভাতীকে পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা।
- সোনারগাঁও হোটেলের নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
- যায়যায়দিনের বিশেষ প্রতিনিধিকে হুমকি দিল মানব পাচারকারী
- পঞ্চগড় থেকে আরো বেশি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা
- খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন ৮ নভেম্বর
- সাংবিধানিক বিষয়ে তাড়াহুড়ো নয়: তারেক রহমান
- সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতিক সহকারী অধ্যাপক একলাছুর রহমান একলাছ
- স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি’র প্রতিষ্ঠাতা এ হান্নান ফিরোজ জন্মবার্ষ
- সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতিক আলাউদ্দিন নাসিম
- সিঙ্গাপুরে গড়েছে অপরাধের সামাজ্র্য
অনিয়ম ও দুর্নীতি`র বরপুত্র হন্ডি জামান - মেহেরুন মনসুরের বিলাসবহুল জীবনযাপনের অর্থের মূল উৎস কোথায় ?
- স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের পুনর্বহা
- বেনজীরের ব্যবসায়িক পার্টনার রাসেলের ইউসিবি ব্যাংক দখলের পায়তারা
- পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় বাংলাদেশের
- হত্যা ও চাঁদাবাজির হুমকিতে আতঙ্কিত আড়াইহাজারের ব্যবসায়ীরা
- প্রবাসী তানভীর অপুর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ
- প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটির উদ্যোগে বন্যা দুর্গতের ত্রাণ বিতরণ
- যায়যায়দিনের বিশেষ প্রতিনিধিকে হত্যার হুমকি
- একরামুন্নেছার প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা`র পদত্যাগ
- ডুবতে বসেছে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল
- সাবেক এমডি তুহিন রেজার বিরুদ্ধে ফাস্ট ফাইনান্সের করা মামলা খারিজ
- অতিষ্ঠ বনশ্রীবাসী
বনশ্রীর অঘোষিত ডন সাব্বির - রাজস্ব আদায় ও রিজার্ভ সংকট।
- প্রভাষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ
- বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন
- বইমেলায় হুমায়রা স্যারনের তিনটি হরর থ্রিলার বই
- আইএসডিবি আইটি গ্র্যাজুয়েটরা
আইটি সেক্টরে উল্লেখ্য অবদান রাখছে - বইমেলায় ফারহানা মোস্তফা লিজার ‘দৌর্মনস্য ও কোরআন’
- পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাল জাহানারা বাসার
- পঙ্গু স্বামী-সন্তান নিয়ে ধারে ধারে ঘুরছে রিক্তা
ভূমি খেকুর দখলে বসতভিটা - সৌদি আরব সকল দেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে: রাষ্ট্রদূত
- লাল হট প্যান্টে ‘দেবরদের’ ঘুম কাড়ছেন বৌদি!
- খেলছেন স্বামী, ফোন হাতে ভিডিও করলেন মাহি
- লাল পোশাকে বৌদির ছবি আগুন জ্বালাবে পুরুষ হৃদয়ে!
- ফটোশুটে ফের উত্তাপ ঝরালেন ‘হট’ প্রিয়াঙ্কা! (ভিডিও)
- ইলিয়াসের বিরুদ্ধে সুবাহ’র মামলা
- নাম তার কিশোর কুমার গাঙ্গুলি
- নিজের মনে কথা বললেন মিথিলা
- বাংলাদেশের তাপসের ভিডিওতে সানি লিওন
- বাংলা গানে নাচলেন সানি লিয়ন
- তানজিন তিশা এখনো সিঙ্গেল?
- যে কারণে মেয়েরা বিবাহিত পুরুষদের পছন্দ করে
- ‘পরকীয়া’ করছেন অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি
- অক্ষরা হাসানের গোপন যে সকল ছবি ভাইরাল
- মিমের প্রথম
- ভারতের প্রথম নারী সিরিয়াল কিলার জয়া!