শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১ |   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উত্তেজনায় দুলছে দু’দল, ভারত ১০০/৪

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২২ ০০ ১২ ০১  

উত্তেজনায়-দুলছে-দুদল-ভারত-১০০৪

উত্তেজনায়-দুলছে-দুদল-ভারত-১০০৪

শুরুতেই কে এল রাহুলকে ০ রানে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচ ধরে রাখার সিগনাল দিয়েছিল পাকিস্তান। নাসিম শাহর বলে সরাসরি বোল্ড আইট হন রাহুল। এরপর বিরাট কোহলিকে নিয়ে রোহিত শর্মার প্রতিরোধ সে ধাক্কা সামাল দেয়। তবে তাদের বেশিদূর এগুতে দেননি নওয়াজ। পরপর দুই বলে ফেরালেন ভারতীয় দুই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানকে। আর তাতেই ভারতকে রীতিমতো আটকে দিলেন তিনি।

শেষ খবর পর্যন্ত ভারত ১৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে দলীয় শতক পার করেছে।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এবারের আসরে এটাই দুই দলে প্রথম ম্যাচ। এশিয়া কাপের দ্বিতীয় দিনের হাই ভোল্টেজ এ ম্যাচে ভালো শুরু করলেও মধ্যভাগে যেন খেই হারালো পাকিন্তান। হার্দিক পান্ডিয়াদের বোলিংয়ের কাছে যেন অসহায় আত্বসমর্পন করলেন পাকিস্তানি ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত ১৯.৫ বল খেলে সব উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস।  ১৪৮ রানের লক্ষ্যে এখন ব্যাট করছে ভারত।।

ধীরগতির উইকেটে ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করার কাজটা সহজ নয় এটা ভালো করেই জানে রোহিতরা। কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায় যখন দলের ওপেনার ফেরেন শূন্য হাতে, শুরুর ওভারেই। নাসিম শাহর শিকার হয়ে রাহুলের ফেরাটা ভারতকে অবশ্য অত ভাবায়নি। উইকেটে যে রোহিত-কোহলি ছিলেন!

কোহলি শুরুতে অনেকটা নড়বড়ে থাকলেও সময়ের সাথে সাথে তিনি উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন বেশ। রোহিত শুরুতে নড়বড়ে না থাকলেও খেলছিলেন বেশ ধীরগতিতে। তবে তিনি খোলস ছেড়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন অষ্টম ওভারে। সে ওভার করতে আসা মোহাম্মদ নওয়াজকে চতুর্থ বলে লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান তিনি। এর এক বল পর তিনি আবারও ছক্কা হাঁকাতে চাইলে বলটা গিয়ে সোজা জমা পড়ল ইফতিখার আহমেদের হাতে। অষ্টম ওভার শেষে ৫০ রানে ভারত হারায় তাদের দ্বিতীয় উইকেট।

দশম ওভারের শুরুর বলে রোহিতকে বিদায় করা নওয়াজ এবার শিকার করেন কোহলিকে।দশম ওভারের শুরুর বলে তাকে রোহিতের মতোই লং অফ দিয়ে সীমানাছাড়া করতে চেয়েছিলেন কোহলি। টাইমিং হয়নি ঠিকঠাক, বলটা সোজা গিয়ে জমা পড়ে সেই লং অফে থাকা ইফতিখারের হাতে। নিজের পরপর দুই বলে রোহিত-কোহলিকে ফিরিয়ে ভারতকে রীতিমতো নাড়িয়েই দেন নওয়াজ। এদিকে ইনিংসের ১৮ তম ওভারে এসে পেসার নাসিম শাহ সরাসরি বোল্ড করেন সুরিয়া কুমার যাদবকে।  

পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলাদা এক উত্তেজনা আর চাপে সমৃদ্ধ এক খেলা। নিজেদেরে ইনিংসের শুরুতে প্রত্যাশার সে চাপ নিতে পারেননি বাবর আজম আর ফখর জামানরা। শুরুতে তাদের উইকেট হারালেও রিজওয়ান আর ইফতেখার আহমেদের হাত ধরে ৬.৫ ওভারে ফিফটির দেখা পায় পাকিস্তান। আর ১৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে দলীয় শতক পার করে দলটি। যদিও টি-২০ ম্যাচে ফাইট দিতে এ রান মোটেও যথেস্ট না। 

পাকিস্তানের ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার বাবর আজম ও রিজওয়ান। দুই ওভার ভালো করে খেললেও বেশিক্ষন চাপ সামলে ধরে রাখতে পারেননি বাবর। আর তাই ৩ ওভার যেতে না যেতেই বাবর ভুবনেস্বর কুমারের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান। আউট হবার আগে করেন ৯ বলে ১০ রান। তার পর পরই আউট হন ফখর জামান। আভেশ খানের বলে দীনেশ কার্তিকের তালু বন্দী হন তিনি। তিনিও বাবরের সমান ১০ রান করেন। 

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৪৩ রান তোলে পাকিস্তান। এরপর ৩৮ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন ইফতিখার আহমেদ আর রিজওয়ান। ১৩তম ওভারে জুটিটি ভাঙেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার বাউন্সার হুক করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কার্তিকের গ্লাভসবন্দী হন ইফতিখার। করেন ২২ বলে ২৮ রান। নিজের পরের ওভারে এসে জোড়া শিকার করেন হার্দিক। সেট ব্যাটার রিজওয়ান ৪২ বলে ৪৩ আর খুশদিল শাহকে ২ রানে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন ভারতীয় এই অলরাউন্ডার।

সেখান থেকে দ্রুত আরও দুই উইকেট হারায় পাকিস্তান। ভুবনেশ্বরের লেগকাটারে আসিফ আলি ৭ বলে ৯ রানে জোরে ব্যাট হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ হন বাউন্ডারিতে। পরের ওভারে মোহাম্মদ নেওয়াজকে ১ রানে তুলে নেন অর্শদীপ সিং।

১১৪ রানে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তান এরপর লড়াকু পুঁজি পর্যন্ত গেছে শেষ উইকেট জুটির কল্যাণে। হারিস রউফ আর শাহনেওয়াজ দাহানি ৮ বলে যোগ করে দেন মূল্যবান ১৯ রান। রউফ ৭ বলে ১৩ আর দাহানি ৬ বলেই ২ ছক্কায় করেন ১৬ রান।

১৯তম ওভারে জোড়া উইকেট শিকার করা ভুবনেশ্বরই ছিলেন ভারতের পক্ষে সবচেয়ে সফল। ৪ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। ৩টি উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া।

এশিয়া কাপের চলতি আসরে মহাগুরুত্বপূর্ণ ও হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৮টায়।

ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এবারের আসরে এটাই দুই দলে প্রথম ম্যাচ।

এই ম্যাচে ভারত দলে বড় চমক বলতে উইকেট রক্ষক ব্যাটার রিশাভ পান্টের না থাকা। তার জায়গায় উইকেটের পেছনে দাঁড়াবেন দীনেশ কার্তিক। চারজন পেস বোলার নিয়ে নামছে তারা। স্পিনার হিসেবে খেলছেন জাদেজা ও চাহাল।

অন্যদিকে পাকিস্তান দলে শাহিন আফ্রিদি না থাকা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। হারিস রউফ, দাহানি ও নাসিমকে নিয়েই দলটি পেস আক্রমণ সাজিয়েছে। শাদাব খান ও নাওয়াজ ঘুর্ণিজালে ভারতীয়দের বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় নামবেন।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই ম্যাচ শুধুই একটা ক্রিকেট ম্যাচ না, এটা একটা মর্যাদার লড়াইও। যা জিততে মুখিয়ে থাকে দু’দলই। তাই প্রতিবারই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে থাকে বাড়তি উন্মাদনা। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়।

টুর্নামেন্টে ‘এ’গ্রুপে রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। গ্রুপের অন্য দল বাছাই খেলে উঠে আসা হংকং। বাছাই পর্ব পেরিয়ে মূল পর্বে নাম লেখায় তুলনামুলক দুর্বল দলটি। ফলে আজকের জয়ী দলই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরের রাউন্ডে যাবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। 

টি-২০তে এখন পর্যন্ত ৯বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। সেখানে ৭বার জিতেছে ভারত। ২বার জয় পায় পাকিস্তান। গত বছর অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে শেষ দেখায় জয় পেয়েছিল বাবর আজমের দল। 

এশিয়া কাপের মঞ্চে মোট ১৫বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। তাতে জয়ের পাল্লা ভারী ভারতেরই। ৮বার জয় পেয়েছে ভারত, ৫বার জিতেছে পাকিস্তান। ২টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপ হয়েছিলো টি-২০ ফরম্যাটে। ঐ আসরে ভারত ৫ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল।

স্কোর:

পাকিস্তান : ১৪৭/১০ - ১৯.৫ ওভার

মোহাম্মদ রিজওয়ান: ৪৮

ইফতিখার আহমেদ : ২৮

বোলিং

ভূবনেশ্বর কুমার : ৪

হার্দিক পান্ডিয়া : ৩

আর্শদ্বিপ সিং: ২

 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী