দেড় মাসেই নবদম্পতির বিচ্ছেদ করল করতোয়া
প্রকাশিত : ০১:১৫ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ সোমবার
দেড়-মাসেই-নবদম্পতির-বিচ্ছেদ-করল-করতোয়া
কথাগুলো বলছিলেন হিমালয়ের খোঁজে করতোয়ার তীরে অপেক্ষমাণ তার দুলাভাই গ্রি বাবু। শ্যালকের খোঁজে মধ্যরাত অবধি করতোয়ার তীরে অপেক্ষা করে গিয়ে ভোরে আবারো এসেছেন করতোয়া পাড়ে। কিন্তু হিমালয়ের খোঁজ মেলেনি।
হিমালয়ের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি খালপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ-সারদা রানী দম্পতির ছেলে। দেড় মাস আগে হিমালয়ের বিয়ে হয় বন্যা রানীর সঙ্গে। মহালয়ার অনুষ্ঠানে পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে এক নৌকায় ছিলেন তারা। বন্যা সাঁতরে তীরে উঠলেও হিমালয় ও তার মামাতো বোন আঁখি এখনো নিখোঁজ।
গ্রি বাবু জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় তার স্ত্রীর মামি ও খালা মারা গেছেন। রোববার তাদের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরিবারের অপর দুই নিখোঁজ সদস্যের খোঁজে তারা নদীতীরে অপেক্ষা করছেন। বাড়িতে সবাই শোকে মাতম করছেন।
এদিকে রাতের বিরতির পর সোমবার সকাল থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল। নদীতে তখন স্রোতের তীব্রতা। সবার চোখ ডুবুরি দলের নৌকার দিকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীতীরে ভিড় বাড়ছে। উদ্ধার অভিযানের ধীরগতিতে অপেক্ষমাণ স্বজনদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
এরমধ্যে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহবুবুল ইসলামের কাছে খবর আসে, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ভাটিতে দেবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। আরো ৩৫ কিলোমিটার ভাটিতে দিনাজপুরের খানসামা ফায়ার সার্ভিস দল করতোয়ার জিয়া ব্রিজের কাছে আরো একজনের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে তখনও ওই উদ্ধারকৃত তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর কিছু পরে জালিয়াপাড়া ঘাটের কাছে কবিতা রানী নামে আরো এক নারীর রদেহ উদ্ধার করেন স্বজনরা। কবিতা রানী মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের ফুটকিবাড়ী গ্রামের হেমন্তের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
সোমবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ২৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তখনও স্বজনরা নিখোঁজ অনেকের সন্ধানে করতোয়া তীরে অপেক্ষায় রয়েছেন।