মসজিদ নির্মাণে ২২ কিলোমিটার সাতাঁর কাটলেন বৃদ্ধ
প্রকাশিত : ০৩:১৫ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ রোববার
মসজিদ-নির্মাণে-২২-কিলোমিটার-সাতাঁর-কাটলেন-বৃদ্ধ
সাড়ে ২২ কিলোমিটার নদীপথ সাঁতার কাটতে তিনি সময় নিয়েছেন মাত্র ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। কৃষক শহিদুল ইসলাম রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউপির দঁড়ি বালুয়াকান্দি গ্রামের হাজী দানিছ আলীর ছেলে।
উপজেলার আড়িয়াল খাঁ থেকে মেঘনা নদীতে একটানা সাড়ে ২২ কিলোমিটার সাঁতারের রেকর্ড করেছেন তিনি।
বৃদ্ধ তার এলাকার একটি মসজিদ নির্মাণের তহবিল সংগ্রহের জন্য এই সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন বলে জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আল আমিন মিয়ার সহায়তায় স্থানীয় যুব সমাজ এ সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর আদিয়াবাদ সরকারি কলেজ ঘাট থেকে সাঁতার কাটা শুরু করেন কৃষক শহিদুল ইসলাম। মেঘনা নদী দিয়ে বেলা ২ টা ২০ মিনিটে নরসিংদী সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি ব্রিজ সংলগ্ন ঘাটে এসে পৌঁছান। এই দুই ঘাটের দূরত্ব সাড়ে ২২ কিলোমিটার সাঁতরে পার হতে তার সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।
সাঁতার প্রতিযোগিতার খবর শোনে সকাল থেকে সাঁতার উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঁধভাঙ্গা মানুষের ঢল নামে নদীর পাড়ে। তাকে একনজর দেখতে ছোট-বড় নৌকা, স্পিডবোট ও নদী পারে কয়েক হাজার উৎসুক জনতার পুরো সময় নদী পাড়ে ভিড় জমান।
আনন্দমুখর পরিবেশে এ সাঁতার সম্পন্ন হয়। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা এ কাজে উৎসাহ দিতে অনেকেই তার সঙ্গে সাঁতার প্রতিযোগতায় অংশ নেন। সাঁতার দেখতে আসা অনেকেই ছোট বড় নৌকা নিয়ে শহিদুল ইসলামের সাঁতারের সঙ্গে সঙ্গে সাহস দিতে সঙ্গে সঙ্গে থাকেন। সাঁতরে নাগরিয়াকান্দি এলাকায় তীরে ওঠার পর দর্শনার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন শহিদুল ইসলাম। এ সময় ঘাটে হাজার হাজার মানুষ তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
পাশাপাশি অনেকে মসজিদ নির্মাণের ব্যয়ের অর্থ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে এম আর রহমান, এস এম শরীফ, আ. করিমসহ আরো কয়েকজন জানান, শহিদুল ইসলামের মেঘনা নদীতে সাঁতারের কথা শুনেই তারা ছুটে এসেছেন। এর আগেও তার সাঁতারে সবাই আনন্দ উদযাপন করে ছিল। এই বয়সে এসেও মসজিদ নির্মাণের তহবিল সংগ্রহে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার নজির গড়েছেন।
সাঁতার দেখতে আসা এস এম শরীফ নামে এক দর্শক জানান, আমরা চাই তার এমন কৃতিত্বের জন্য সারা বিশ্বের মানুষ তাকে মনে রাখবে। এমন বয়সে তার এই সাফল্যে গর্বিত রায়পুরাবাসীও।
এর আগেও উপজেলার পল্লী চিকিৎসক বকুল ৪০ কিলোমিটার সাঁতরে রেকর্ড করেন। তার পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে দুই দুইবার রেকর্ড করেন ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধ কৃষক। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মেঘনা নদীতে ১৮ কিলোমিটার সাঁতরে ৪ ঘণ্টা সময় নেন। তাকে উৎসাহ দিতে স্থানীয়রা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করেন। যার পুরো টাকা তিনি মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যয় করেন। অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করতে দানশীল ব্যক্তিদের দৃষ্টি কামনা করে সহযোগিতা চেয়ে আজও এমন একটি সাঁতারে অংশ নেন শহিদুল ইসলাম।
কৃষক শহিদুল বলেন, ‘প্রতিদিন সাঁতার কাটি বলে এখনো সুস্থ জীবন যাপন করে যাচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা ছিল। নিজ গ্রামে হাজি বাড়ি জামে মসজিদ নির্মাণে এ সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেই।