শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অদিতিকে বালিশ চাপায় হত্যার আগে যা করেন প্রাইভেট শিক্ষক রনি

প্রকাশিত : ১১:১৫ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার

অদিতিকে-বালিশ-চাপায়-হত্যার-আগে-যা-করেন-প্রাইভেট-শিক্ষক-রনি

অদিতিকে-বালিশ-চাপায়-হত্যার-আগে-যা-করেন-প্রাইভেট-শিক্ষক-রনি

নোয়াখালীর লক্ষীনারায়ণপুরে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রী তাসমিয়া হোসেন অদিতিকে (১৪) বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনি।

শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সময় এ তথ্য জানান অভিযুক্ত আসামি। নোয়াখালীর এসপি মো. শহীদুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে প্রেস কনফারেন্সে এ কথা জানান।  

এসপি বলেন, এক সময় রনির কাছে প্রাইভেট পড়তেন অদিতি। হঠাৎ অদিতি তার কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দিয়ে নতুন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শুরু করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন রনি। এ বিষয়সহ অদিতির ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে তাৎক্ষণিক রনিকে প্রথমে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তখন তার তুথনি ও ঘাড়ে নখের আঁচড়ের তাজা দাগ দেখা যায়। নখের আঁচড়ের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে রনি নানা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। আঁচড়ের ব্যাপারে তার থেকে কোনো সদুত্তর না পেয়ে তার বিষয়ে আরো সন্দেহ জোরালো হয়। তখন তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আদালতে সোপর্দ করে ১০দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রনি ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।   

আসামির স্বীকারোক্তির বরাতে এসপি আরো বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টায় অদিতির বাসায় যান রনি। বাসায় গিয়ে বন্ধ দরজা নক করেন। এতে অদিতি বাসার দরজা খুলে দেন। তখন বাসায় প্রবেশ করে অদিতির সঙ্গে গল্পগুজব করেন রনি। গল্পগুজবের একপর্যায়ে রনি অদিতিকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সেই সময় ক্ষুব্ধ অদিতি বিষয়টি সবাইকে জানানোর হুমকি দেন। হুমকিতে ভয় পেয়ে রনি অদিতিকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে ছোরা এনে অদিতির বাম হাতের রগ ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর আসামি রনি ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘরের আলমিরা ও ওয়ারড্রবের জামা-কাপড়, কাগজ ছড়িয়ে রুমের দরজা লক করেন। এরপর মূল ঘরের দরজা বাইর থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালীর মাইজদীতে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিয়া হোসেন অদিতিকে (১৪) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত সাবেক গৃহ শিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে (২০), ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদ (২০) গ্রেফতার করে পুলিশের একাধিক দল।