বিয়ে করায় বাপেরভিটায় জায়গা নেই, ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে
প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
বিয়ে-করায়-বাপেরভিটায়-জায়গা-নেই-ঘুরছেন-দ্বারে-দ্বারে
বর্তমানে পরিবারটি ভাড়া বাড়িতে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ভুক্তভোগী পরিবারটি পাচ্ছে না কোনো বিচার।
সাত ভাই বোনের মধ্যে পঞ্চম ফরিদুল ইসলাম সন্টু । তার বড় দুই ভাই মারা গেছেন। অপর বড় ভাই ৫৫ পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করেননি তিনি। ছোট বোন ঝর্ণা একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। বড় দুই বোন মধ্যবয়স্ক হওয়ায় বাড়িতেই থাকেন। তিন বোনই অবিবাহিত। অবিবাহিত তিন বোন এক ভাই মিলে একটি বাড়িতেই থাকেন। সন্টুরাও এই বাড়িতেই থাকতো। সন্টু যখন বিয়ে করতে চায় তখন চার ভাই বোনই বাধা দিয়েছিলো। কারণ যে মেয়েটিকে সন্টু বিয়ে করেছে তাকে তাদের পছন্দ নয়। কারণ কনের ভাই বোনরা রড মিলে ঢাকায় চাকরি করে।
ভুক্তভোগী ফরিদুল ইসলাম সন্টুর বাবা ছলিম উদ্দিন গ্রামীণ ডাক্তার ছিলেন। সন্টুর অভিযোগ তার ভাই বোনেরা কেউ বিয়ে না করায় তারা চেয়েছিলো সন্টুও যাতে বিয়ে না করে। কিন্তু ভাই বোনদের কথা শোনেননি সন্টু। সেই থেকে ভাইবোনদের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে। ভাই বোনদের অমতে বিয়ে করায় প্রায়ই ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়া থেকে হাতাহাতি থেকে মারামারি পর্যন্ত হয়।
চার বছর আগে সন্টুকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ছোট্ট দুই মেয়েকে নিয়ে সন্টু সেই থেকে ভাড়া বাসায় থাকেন। একবেলা খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে তাদের।
১৮ শতক জমির উপর গড়ে উঠেছে সন্টুদের বাড়ি। সেই জমির মধ্যে আইনত সন্টু পাচ্ছেন ৪ শতক। সেই ৪ শতক জমির জন্য এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সন্টু।
এ ব্যাপারে বড়ভাই মন্টু বলেন, সন্টু এখানে বাবার সম্পত্তির অংশ হিসেবে ৪ শতক জমির মালিক। আমরা দেওয়া বা নেয়ার কে ? আমরা দিতে চাই । কিন্তু সন্টু আমাদের মারধর করে। তার বউও মারধর করে। অনেকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। অপমান করে। তারা এখানে এলে আমরা নিরাপত্তাহীন। তার নামে মামলা হয়েছে।
কিন্তু সন্টু বলেন, ভাই বোনেরা মিলে আমাকে, আমার স্ত্রী, দুই সন্তানকে প্রায়ই মারধর করতো। একদিন বাড়ি থেকে তারা আমাদের বের করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, মাঝিপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষক জাহেদ আলী, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ হামিদুল হাসান লাবুসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেন। মীমাংসার উদ্যোগ নেন ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও।
সহকারী অধ্যাপক জাহেদ আলী বলেন, সন্টুর ভাই মন্টু আজ কাল করছে। মীমাংসার কোনো ইচ্ছা তাদের মধ্যে নেই।
চেয়ারম্যান মসলিম উদ্দিন বলেন, কয়েকবার ডাকা হয়েছে। কিন্তু সন্টুর ভাই- বোনেরা কারো কথা শুনে না।
পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন সন্টু। সম্প্রতি তেতুঁলিয়া থানায় ১ মাসে তিনবার আবেদন করেন। কিন্তু আবেদন পত্রটি দুইবার হারিয়ে যায়। পরে আবার আবেদন চেয়ে পাঠান থানার ওসি আবু সাঈদ।
ওসি আবু সাঈদ বলেন, আমি তদন্তের জন্য এসআই সাকিলকে দায়িত্ব দিয়েছি। শাকিল একবার গিয়ে ফিরে এসেছে। তাকে আবার পাঠানো হবে।