নিদাহাস ট্রফির স্মৃতি কি ফিরিয়ে আনতে পারবেন মুশফিক-রিয়াদরা?
প্রকাশিত : ০৫:৩০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
নিদাহাস-ট্রফির-স্মৃতি-কি-ফিরিয়ে-আনতে-পারবেন-মুশফিক-রিয়াদরা
এশিয়া কাপের বাঁচামরার লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। দুই দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরে যাওয়ায় এদিন যে দল জিতবে তারাই পাবে সুপার ফোরের টিকেট। এমন ম্যাচের আগে অফ ফর্মের কারণে ব্যাপক চাপে আছেন মুশফিক ও রিয়াদ।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ-ভারত ও শ্রীলংকাকে নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল নিদাহাস ট্রফি নামে টি-২০ টুর্নামেন্ট। সে আসরে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে ফাইনালে উঠে গিয়েছিল টাইগাররা। এখন পর্যন্ত টি-২০তে টাইগারদের সেরা পারফরম্যান্স ধরা চলে নিদাহাস ট্রফির সেই পারফরম্যান্সকেই।
সে আসরে শ্রীলংকাকে দুবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষেও দারুণ লড়াই উপহার দিয়ে মুগ্ধ করেছিল ক্রিকেটবিশ্বকে। আর ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ২ রানের সেই হার তো থেকে যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের চিরকালীন দুঃখগাঁথা হয়ে।
২০১৮ এর সেই টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচটা ছিল রানবন্যার। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করেছিল শ্রীলংকা। প্রথম ইনিংসের পরই অনেকে হার নিশ্চিত ধরে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওপেনিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল-লিটন দাস দারুণ ব্যাটিংয়ে শক্ত ভিত দিয়েছিল।
এরপর সেখানে দাঁড়িয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৩৫ বলে ৭২ রানের সাইক্লোনে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় হাঁকানো ইনিংসটি নিঃসন্দেহে তার খেলা সেরা টি-২০ ইনিংসের একটি।
শ্রীলংকার বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটা জয় পেলেই বাংলাদেশ ফাইনালে; এমন সমীকরণ ছিল বাংলাদেশের সামনে। ফাইনালের হাতছানি পাওয়া ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে ৪১ রানেই লংকানদের ৫ উইকেট ফেলে দিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু সেদিন শ্রীলংকার দুই পেরেরা দাঁড়িয়ে যান ত্রাতার ভূমিকায়।
দুজনের নৈপুণ্যে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৯ রান করে টুর্নামেন্টের স্বাগতিক শ্রীলংকা। কুশল পেরেরা খেলেছিলেন ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস। আর শেষের দিকে নেমে ঝড় তুলে ৫৮ রান করেছিলেন থিসারা পেরেরা।
পরে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ব্যাটে ভালোই জবাব দিচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে সাব্বির-সৌম্য-মুশফিকের বিদায়ের পর বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমও ৪২ বলে ৫০ রান করে বিদায় নেন। এরপর সাকিব আল হাসানও যখন বিদায় নেন জয়ের জন্য তখনো ২৭ রান দরকার বাংলাদেশের।
এই ধ্বংসস্তূপে সেদিন দাঁড়িয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আহত বাঘের মত মরণ কামড় দেন লংকানদের। দলীয় ১৩৭ রানে মিরাজ ও ১৪৮ রানে অষ্টম উইকেট হিসেবে মুস্তাফিজের বিদায় নিলে রুবেল হোসেনকেই সঙ্গী বানিয়ে লড়েন রিয়াদ। সেদিন এক বল বাকি থাকতে দলকে জয় এনে দেন সাইলেন্ট কিলার।
সেদিন ১৮ বলে রিয়াদের সেই ৪৩ রানের ইনিংসটা ছিল ওয়ানম্যান শো'র পারফেক্ট উদাহরণ। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সেই ২৭ রানে রিয়াদ ছাড়া আর কারো অবদান ছিল না। মিরাজ ও মুস্তাফিজ রানআউট হয়েছিলেন খাতা খোলার আগেই। রুবেল তো সুযোগই পাননি খেলার। সেই ইনিংসে ৩০ রানই রিয়াদ তুলেছিলেন বাউন্ডারি থেকে।
বাংলাদেশের সামনে আবার শ্রীলংকা। বাঁচামরার এই লড়াইয়ের আগে রিয়াদ-মুশফিক নেই ফর্মে। দলে তাদের জায়গা নিয়েও আছে প্রশ্ন। এশিয়া কাপে সুপার ফোরে ওঠার লড়াইয়ে শ্রীলংকার মুখোমুখি হওয়ার আগে হয়তো নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হবেন এই দুই তারকা।
আরেকবার সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তিতে তারা কি জবাব দিতে পারবেন সকল সমালোচনার?