বাংলাদেশ-শ্রীলংকা লড়াইয়ে যে পাঁচটি বিষয় বড় ভূমিকা রাখবে
প্রকাশিত : ০৪:৩০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ-শ্রীলংকা-লড়াইয়ে-যে-পাঁচটি-বিষয়-বড়-ভূমিকা-রাখবে
টি-২০ ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা দুই দলই আফগানিস্তানের কাছে হেরে এখন কোণঠাসা পরিস্থিতিতে আছে। আজকের বিজয়ী দল সুপার ফোরে জায়গা পাবে, হারলে এখানেই শেষ এশিয়া কাপ ২০২২।
বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই দলের মাঠে নামার কথা রয়েছে। এর আগে দেখে নিন কোন পাঁচ বিষয় আজকের ম্যাচে বড় ভূমিকা রাখবে।
দুবাইয়ে টস বড় ফ্যাক্টর
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে, এটা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে। ব্যাটিং নেয়ার পর বাংলাদেশের টপ অর্ডার পাওয়ার-প্লেতে রান তুলতে পারেনি তেমন, উইকেটও দিয়ে এসেছে সহজেই।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কিংবা শ্রীলংকা বনাম আফগানিস্তান ম্যাচে দেখা গেছে, ব্যাটিং লাইন আপ যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়ার পরেও টসে জিতে ফিল্ডিং নিচ্ছে দলগুলো। এই ধরনের উইকেটে যত সময় যায়, তত ব্যাট করার জন্য সহজ হয়।
আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নিজেদের লক্ষ্য জানা থাকলে ব্যাটিং কৌশল ঠিক করে মাঠে নামা যায়, তাই টসে জিতে বোলিং নেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবার ব্যাটিং নিলেও শুরু থেকে আগ্রাসী ক্রিকেট না খেলতে পারলে শেষ পর্যন্ত ডিফেন্ড করার মতো রান করতে পারেনা বাংলাদেশ।
শ্রীলংকার মূল শক্তি হাসারাঙ্গা
শ্রীলংকার দলে আছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের নিলামে ঝড় তোলা অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। নিলামে ১০ কোটি রুপির বেশি দাম উঠেছিল এই লেগ স্পিনার অলরাউন্ডারের।
ব্যাট হাতে এখনও সামর্থ্যের শতভাগ দিতে পারেননি হাসারাঙ্গা। এমনকি গত ৬ ম্যাচে ২০ রানও পার করতে পারেননি তিনি। কিন্তু বল হাতে দুর্দান্ত। টি-২০ ক্রিকেটে লেগস্পিনারদের গুরুত্ব এমনিই বেশি। ৩৬ ম্যাচ খেলে ৬২ উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা।
গড় ১৪ এর একটু বেশি হলেও হাসারাঙ্গা ওভার প্রতি সাতের নিচে রান দিয়েছেন, যা টি-২০ ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে সাহায্য করে। বাংলাদেশ এই ধরনের বোলারদের ভালো একটা স্পেলেই দিশেহারা হয়ে পড়ে, যেমন প্রথম ম্যাচে শুরুতে মুজিব উর রহমান ও পরে রশিদ খানের বলে হয়েছে।
দুই দলের কথার লড়াই
আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর শ্রীলংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাটা আরেকটু সহজ হবে, বাংলাদেশের সাকিব ও মুস্তাফিজ ছাড়া তেমন কোনও ভালো বোলার নেই।
ব্যাপারটা খুব একটা ভালোভাবে নেয়নি বাংলাদেশ ক্যাম্প। প্রথমে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, কে কেমন সেটা মাঠে দেখা যাবে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে দলের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, আমি তো শ্রীলংকার কোনও বোলারই দেখিনা।
পাওয়ার প্লে ব্যবহার করা
শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ দুইদলই এমন একটা অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছে, তারা প্রথম ছয় ওভার হাত খুলে ব্যাটই করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু পাওয়ার প্লেতে শ্রীলংকা তিন উইকেট হারিয়েও ৪১ রান তুলতে সমর্থ হয়েছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ তুলেছিল ২৮। যদিও শ্রীলংকা শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানে গুটিয়ে গেছে। কিন্তু প্রথম ছয় ওভার কাজে লাগানো টি-২০ ক্রিকেটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যা দুই দলই ভালোমতো পারেনি।
ছক্কা মারতে না পারা
বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জাদরান এক ম্যাচে ৬টি ছক্কা মেরেছেন। বাংলাদেশের সব ব্যাটসম্যানরা মিলে শেষ তিনটি টি-২০ আর্ন্তজাতিক ম্যাচে মাত্র ৫টি ছক্কা মেরেছেন।
আধুনিক টি-২০ ক্রিকেটে চার ছক্কার বাইরে অনেক হিসেব থাকলেও ছক্কা মেরে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মতোন ক্রিকেটার প্রয়োজন হয়ে থাকে, যেমনটা বাংলাদেশে দেখা যায় না।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত একটি ছক্কা মেরে ম্যাচের মোমেন্টাম কিছুটা হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের দিকে, পরবর্তীতে তিনি ৩১ বলে ৪৮ রানের একটা ইনিংস খেলেন।
যেটা দলকে অন্তত ১২০ পার করতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানরা ছক্কা মারার মতো ব্যাটই করেননি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা