ব্রাজিলের আমাজনের শেষ আদিবাসী ‘দ্য ম্যান অব হোল’ মারা গেছেন
প্রকাশিত : ০১:৫০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২২ সোমবার
ব্রাজিলের-আমাজনের-শেষ-আদিবাসী-দ্য-ম্যান-অব-হোল-মারা-গেছেন
অলাভজনক সংস্থা সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের মতে, গত ২৬ বছর ধরে রন্ডোনিয়া প্রদেশের ব্রাজিলিয়ান আমাজনের গভীরে তানারু আদিবাসী ভূমিতে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিলেন এ ‘ম্যান অব দ্য হোল’। তিনি বন্যপ্রাণী শিকারের জন্য এক বিশেষ কায়দায় গর্ত খুঁড়ে রাখতেন। তাই নামকরণ হয় ‘দ্য ম্যান অব হোল’।
যোগাযোগের সমস্ত প্রচেষ্টা সবসময় প্রতিহত করে গেছেন সেই আদিবাসী মানব। তারপরও কর্তৃপক্ষ দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করতেন এবং তার দরকার হতে পারে এমন জিনিস, যেমন- দেয়াশলাই, কুঠার, খাদ্যশস্যের বীজ রেখে আসা হতো।
সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তার গোত্রের বাকি মানুষেরা ১৯৭০-এর দশক থেকে কয়েক দফা আক্রমণে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। প্রধানত গবাদিপশুপালক ও ভূমি দখলকারীরা এসব হামলা চালান।
সংস্থাটির গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ফিওনা ওয়াটসন বলেন, এ ব্যক্তির নাম কেউ জানতেন না, এমনকি তার গোত্র সম্পর্কেও খুব বেশি কিছু জানা নেই কারো। এখন তার মৃত্যুর সঙ্গে তার গোত্রের ওপর চালানো গণহত্যা সম্পূর্ণ হলো।
২৩ আগস্ট ফুনাইয়ের কর্মকর্তারা একটি কুঁড়েঘরে ঐ ব্যক্তির মরদেহটি একটি ঝুপড়ির মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন। হামলা বা অন্য কারো উপস্থিতির কোনো আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি।
ফুনাই বলছে, ঐ ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে ফেডারেল পুলিশ তার মরদেহের ফরেনসিক পরীক্ষা করবে। ২০১৮ সালে ফুনাই ‘ম্যান অব দ্য হোলের’ সর্বশেষ ভিডিওটি প্রকাশ করেছিল। সেই ভিডিওতে তাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় হাতে কুঠার নিয়ে গাছ কাটতে দেখা যায়।
সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তার জীবনযাত্রার কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি ভুট্টা ও পেঁপেসহ কিছু শস্য রোপণ করেছিলেন এবং খড়, কাঠ ও গাছের পাতা দিয়ে ঘর তৈরি করেছিলেন।
ব্রাজিলে ৩০৫টিরও বেশি আদিবাসী জনগোষ্ঠী আছে যাদের সম্পর্কে মূলধারার সমাজ জানে। তারা ২৭৪টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলে। অন্যদিকে বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ও যোগাযোগহীন উপজাতির সংখ্যা ৫০ এরও বেশি।
সারা পৃথিবীতে এমন শতাধিক জনগোষ্ঠী আছে। তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাস করে আমাজন এলাকায়। এদের সঙ্গে মূলধারার সমাজের সম্পর্ক ‘শান্তিপূর্ণ’ নয়। তাদের জনসংখ্যা কত, তারা কী ভাষায় কথা বলে তার সম্পর্কে তথ্য নেই।
সূত্র-সিএনএন