শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১ |   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেষ ৫ ওভারের গ্লাডিয়েটর হার্দিক পান্ডিয়া!

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৭ ০৫ ০২  

শেষ-৫-ওভারের-গ্লাডিয়েটর-হার্দিক-পান্ডিয়া

শেষ-৫-ওভারের-গ্লাডিয়েটর-হার্দিক-পান্ডিয়া

হার্দিক পান্ডিয়া, টি-২০র শেষ ৫ ওভারের এক নির্ভরতার নাম। যত রানের টার্গেট থাকুক না কেনো পান্ডিয়া মাঠে থাকলে ভারত ক্যাপ্টেনের কপালে চিন্তার কোনো ভাজ থাকে না। কারণ শেষ ৫ ওভারের রানের অসাধ্যকে সাধন করেন এই ব্যাটার। তার আবারো প্রমাণ দিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে দলকে জিতিয়ে। যেন শেষ ৫ ওভারের গ্লাডিয়েটর হার্দিক পান্ডিয়া!   

আর এজন্য ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ খবর প্রকাশ করে এই শিরোনামে, ‘মে হু না!’ সঙ্গে হার্দিক পান্ডিয়ার এক রাজ্য জয়ের আনন্দের ছবি। 

এশিয়া কাপের মঞ্চে হার্দিক গতকাল এমনই এক কাজ করেছেন, দল যখন রান রেটের প্রবল চাপে, তখন উইকেটে এসে নিমিষেই দলকে জিতিয়ে দেন হার্দিক। 

ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ৬ বলে ৭ রান দরকার ছিল ভারতের। প্রথম বলে স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ রবীন্দ্রর জাদেজাকে বোল্ড করেন। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান দিনেশ কার্তিক এক রান নেন। তৃতীয় বল জোরে ব্যাট চালিয়ে কভারের ফিল্ডারকে ফাঁকি দিতে পারেনি। কার্তিক রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ডট বলের পরও ভাবলেশহীন হার্দিক। সতীর্থকে হাত নাড়িয়ে বুঝিয়ে দেন, ‘মে হু না।’ 

হার্দিকের ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস যেন সকল ভারতীয়দের স্বস্তির নিঃস্বাস। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের আগের ২৫ রানে ৩ উইকেট রীতিমত পাকিস্তানকে ডুবিয়ে দেয় ম্যাচের অতলে। 

২০১৮ সালের এশিয়া কাপে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ থেকে স্ট্রেচারে করে বাইরে যেতে হয়েছিল হার্দিককে। সেই মাঠেই তিনি পাকিস্তানকে হারানোর নায়ক। সেদিনের একটি ছবি ও গতকালের জয়ের মুহূর্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘বাধাবিপত্তির চেয়ে প্রত্যাবর্তন অনেক বড়।’

একজন পেস অলরাউন্ডারকে হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত। দল সাজানোই কঠিন হয়ে যাচ্ছিল তাদের জন্য। বাড়তি বোলার নাকি বাড়তি ব্যাটসম্যান, কাকে খেলাবে তা নিয়ে রাজ্যের চাপ রাহুল দ্রাবিড়ের। তবে দল ব্যাটসম্যান হার্দিকের ওপর আস্থা হারায় নি। বোলিং করতে পারবে না জেনেও তাকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলায়। গত আইপিএলেও হার্দিক কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছিলেন। গুজরাট টাইটান্সকে ফাইনালে তুলে শিরোপাও জিতেছিলেন। 

ব্যাটিংয়ে ছন্দময় হার্দিক ধীরে ধীরে বোলিংয়ে ফেরেন। তাতে স্বস্তি ফিরে পায় ভারত শিবির। গতকাল মোহাম্মদ রিজওয়ান, ইফতিখার আহমেদ ও খুশদীল শাহকে রীতিমতো শর্ট বলে নাস্তানাবুদ করিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছেন। ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে তিন হার্ডহিটারকে প্যাভিলিয়নে পাঠানোর কাজটা নিজ কাঁধেই নিয়েছিলেন। তাই তো চির প্রতিদন্দীকে হারিয়ে আজ আনন্দের বন্যায় ভাসছে গোটা ভারতবর্ষ। 

ছক্কায় ম্যাচ জয়ের পর গ্যালারির দিকে তাকিয়ে ডানহাত উপরে তুলে মুম্বাইয়ের বিখ্যাত ড্যান্স স্ট্রিটের স্টেপ দেন হার্দিক। গ্যালারিতে ছিলেন তার বড় ভাই ক্রুনাল পান্ডিয়া। ক্রিকেটে তারা পরিচিত ম্যাগি ব্রাদার্স হিসেবে। 

এশিয়া কাপের ভারত-পাকিস্তানের লড়াই মানে এক অন্যরকম রোমাঞ্চ, যা ছড়িয়ে পড়ে সারা ক্রিকেট বিশ্বে। বলা হয় বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষের চোখ থাকে দুই দলের ক্রিকেট দ্বৈরথে। এই লড়াইয়ে যারা জিতে যায় তারা আনন্দের ফুলঝুরি ছোটান। উৎসবে মাতার উপলক্ষ এনে দেন। যা ভারতীয়দের জন্য এনে দিলেন পান্ডিয়া। মুষ্টিধরা ব্যাটে হাত যেন সেই ভরসারই ইঙ্গিত দেয় ‘মে হু না’। 

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী