শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪ |  অগ্রাহায়ণ ১৫ ১৪৩১ |   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যু

প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২২ ১২ ১২ ০১  

বিশ্বের-সবচেয়ে-নিসঙ্গ-ব্যক্তির-মৃত্যু

বিশ্বের-সবচেয়ে-নিসঙ্গ-ব্যক্তির-মৃত্যু

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের রনডোনিয়া রাজ্যের গভীর জঙ্গলে বসবাস করা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন একটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের শেষ ব্যক্তিটির মৃত্যু হয়েছে। যিনি ‘বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ ব্যক্তি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে ওই ব্যক্তি একা বসবাস করে এসেছেন। তিনি বলিভিয়া সীমান্তের কাছে তানারু আদিবাসী এলাকায় বাস করতেন। ১৯৯৫ সালে ওই ব্যক্তির সম্প্রদায়ের ছয়জনকে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে তিনিই ছিলেন তার সম্প্রদায়ের একমাত্র জীবিত ব্যক্তি।

গত ২৩ অগাস্ট ওই ব্যক্তির মরদেহ ‍তার কুঁড়ে ঘরের বাইরে ঝোলানো একটি হ্যামকে খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে নৃশংসতার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তির বয়স ৬০ বছরের মত এবং তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

১৯৭০ এর দশকের প্রথমদিকে পশুপালকরা চারণভূমি বাড়াতে জঙ্গলের জমি দখল করতে গিয়ে ওই ব্যক্তির সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষকে হত্যা করে বলে বিশ্বাস করা হয়।

আদিবাসী ওই ব্যক্তি গভীর গর্ত করে কখনো সেগুলো পশু শিকারে ব্যবহার করতেন। আবার কখনো সেগুলোতে নিজেই লুকিয়ে থাকতেন। গর্ত করার কারণে তাকে ‘দ্য ম্যান অব হোল’বা ‘গর্তমানব’ নামেও ডাকা হত।

ব্রাজিলের সংবিধান অনুযায়ী, আদিবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে তাদের দখলে থাকা ভূমির মালিক। তাই সাধারণত বাইরের পৃথিবীর মানুষ যখন তাদের ভূমি দখল করতে চায় তখন তাদের হত্যা করে।

তবে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ বা তার কুঁড়েঘরে এমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি যা দেখে মনে হতে পারে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও তদন্তের খাতিরে পুলিশ সেই ব্যক্তির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ওই ব্যক্তির নিরাপত্তার স্বার্থে ১৯৯৬ সাল থেকে ব্রাজিলের ‘ইন্ডিজেনাস অ্যাফেয়ার্স এজেন্সির (ফুনাই) এজেন্টরা তার উপর নজর রাখছে।

২০১৮ সালে ফুনাইয়ের একজন সদস্য জঙ্গলের মধ্যে তার একটি ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ভিডিওতে তাকে কুঠারের মত দেখতে কিছু দিয়ে গাছ কাটতে দেখা যায়।

তারপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। তবে ফুনাই এজেন্টরা নিয়মিত তার কুঁড়েঘরে যেতেন। তার ঘর এবং আশেপাশে যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে তিনি ভুট্টা ও কাসাভা চাষ করতেন এবং পেঁপে ও কলা গাছ রোপণ করতেন।

ব্রাজিলে প্রায় ২৪০টি আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করে। খনি মালিক, কাঠুরে এবং কৃষকরা অবৈধভাবে তাদের ভূমি দখল করতে গিয়ে তাদের জীবন হুমকিতে ফেলেছে।

সূত্র: বিবিসি

Provaati
    দৈনিক প্রভাতী
    এই বিভাগের আরো খবর